ফিকে পুজোয় লক্ষ্মী প্রতিমা গড়ার ঝোঁক শিল্পীর
অন্য বছরগুলিতে এইসময় শিল্পীরা দিনরাত্রি পরিশ্রম করে প্রতিমায় নিখুঁত রূপ ফুটিয়ে তুলতে। কিন্তু এবছর করোনাসুরের দাপটে পুজো উদ্যোক্তাদের তেমন সাড়া পাওয়া যায় নি। শেষমেশ সংসার চালাতে বাধ্য হয়ে মৃৎশিল্পী দুর্গা প্রতিমার বদলে বেছে নিয়েছেন লক্ষ্মী প্রতিমা গড়ার কাজ। এমনই এক ছবি ধরা পড়ল চাঁচলের কুমোরটুলিতে। অবশ্য কিছুটা দেরি হয়ে গেলেও গতকালই রাজ্যের ৩৭ হাজার পুজো কমিটিকে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই খবর মিলতেই পুজোয় ভালো বরাতের দিন গুনছেন কুমোরপাড়া।
চাঁচল কুমোরপাড়ায় বাস বছর পঞ্চাশের অনিমা পালের। ২৫ বছর ধরে একটানা প্রতি পুজোয় মূর্তি গড়ছেন তিনি। পৌঢ় শিল্পী নিজেদের পৈতৃক ব্যবসার অনেক উত্থান পতন দেখেছেন। কিন্তু করোনাভাইরাস যে তাঁদের পেশায় এভাবে প্রভাব ফেলবে তা তিনি কখনো ভাবতেও পারেননি। বড়ো বড়ো পুজো উদ্যোক্তারা এবার বাজেট কমিয়ে একেবারে ছোটো প্রতিমার দিকে ঝুঁকেছেন। অনেকেই আবার ঘটপুজো করে এবার দুর্গাপুজো সারবেন জানিয়েছেন। যার ফলে অনিমা পালের মত মৃৎশিল্পীরা এখনও একেবারে বিশবাঁও জলে।
চাঁচলের মৃৎশিল্পী অনিমা পাল জানান, এবছর করোনার বাড়বাড়ন্তে তেমনিভাবে পুজোপার্বণ হয় নি, ফলে কোনো প্রতিমা গড়ার কাজ তাঁরা পাননি। সংসার চালাতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে। সরকারি সাহায্যও মৃৎশিল্পীর পরিবারে পৌঁছয় না। এদিকে দুর্গাপুজোর আর মাত্র একমাস বাকি, এখনও পুজো উদ্যোক্তাদের তরফে একেবারেই কোনো সাড়া মিলছে না।
অন্য বছরগুলিতে এইসময় তাঁরা খাওয়াদাওয়া ভুলে দিনরাত্রি পরিশ্রম করে প্রতিমা তৈরি করেন। কিন্তু চলতি বছরে করোনা কেড়েছে সেসব কাজ। দুর্গাপুজোর চারদিন পরেই আসে লক্ষ্মীপুজো। তাই চাঁচলের মৃৎশিল্পীরা এবছর ছোটো ছাঁচের লক্ষ্মী প্রতিমা গড়তে এখন ব্যস্ত। কারণ আমবাঙালির প্রতিটি ঘরেই পূজিত হবেন ধনদেবী। লক্ষ্মী প্রতিমা বিক্রি করে এবছর কিছু আয় হতে পারে। দুর্গাপুজো তেমনিভাবে না হলেও বাঙালির ঘরে লক্ষ্মীর নিয়মমাফিক অবশ্যই পুজোর আয়োজন হবে। তাই এই সমস্ত মূর্তি তৈরি করে কিছু লাভের আশা ফুটপাতে বসে বিক্রি করা হবে।
[ আরও খবরঃ করোনাকে হালকা নেবেন না ]
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
Comments