top of page

গ্রেপ্তার নন্দু, আরও বড়ো মাথার তত্ত্ব চৈতালি-কৃষ্ণেন্দুর

টানা ১৬ ঘণ্টার জেরা শেষে মালদা জেলা তৃণমূলের সহসভাপতিকে খুনের দায়ের গ্রেফতার দলেরই শহর সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি৷ একইসঙ্গে ধৃত বাম আমলের ত্রাস, একাধিক খুনের আসামি স্বপন শর্মা৷ মালদা জেলা আদালতের মুখ্য দায়রা বিচারকের নির্দেশক্রমে দু’জনকে ৩ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ৷ বুধবার সাতসকালে এই খবর চাউর হতেই স্তম্ভিত জেলাবাসী৷ প্রশ্ন উঠেছে, এরপর কে? মানুষের সেই প্রশ্নকে খুঁচিয়ে দিয়েছেন আরেক তৃণমূল নেতা, ইংরেজবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী৷ তাঁর দাবি, এই ঘটনায় আরও একজন বড় মাথা রয়েছে৷ তার নামও তিনি জানেন৷ কিন্তু সংবাদমাধ্যমে নয়, তিনি দলনেত্রীকে সেই নাম জানাবেন৷


মঙ্গলবার বিকেল ৪টে ৫৪ মিনিট থেকে নরেন্দ্রনাথবাবুকে পুলিশি জেরা শুরু হয়৷ প্রথমে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) আবু বক্কর, তারপর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) সম্ভব জৈন তাঁকে জেরা করেন৷ রাত পৌনে ১০টা নাগাদ থানায় ঢোকেন পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব৷ জিজ্ঞাসাবাদ শেষ করে বুধবার সকাল পৌনে ন’টা নাগাদ তিনি থানা থেকে বেরিয়ে যান৷ তার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই জেলা পুলিশের তরফে প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে ঘোষণা করা হয়, দুলাল সরকারকে খুনের ঘটনায় নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি ও স্বপন শর্মাকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ আদালতে যাওয়ার পথে নরেন্দ্রনাথ দাবি করেন, তিনি চক্রান্তের শিকার৷ বাবলা সরকারের মতো তিনিও বড় মাথার শিকার৷ ওদিকে স্বপনবাবুর দাবি, তিনি এই ঘটনার কিছুই জানেন না৷ পুলিশ তাঁকে দোকান থেকে তুলে এনেছে৷


নরেন্দ্রনাথবাবুর গ্রেফতারি প্রসঙ্গে দুলালবাবুর স্ত্রী চৈতালি ঘোষ সরকারের প্রতিক্রিয়া, ‘আমি প্রথম থেকে বলে আসছি, পুলিশি তদন্তে আমার ভরসা রয়েছে৷ দলও আমার পাশে রয়েছে৷ আজ স্বামীর শ্রাদ্ধের শেষ কাজ হচ্ছে৷ কাজকর্ম শেষ হলেই আমি দলীয় নেতৃত্ব এবং পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব৷ দেখা করব দলনেত্রীর সঙ্গেও৷ তবে আমার ধারণা, এই ঘটনার পিছনে আরও লোক রয়েছে৷ পুলিশ নিশ্চয়ই তাদের খুঁজে বের করবে৷ ২০২২ সালে নন্দু তিওয়ারির সঙ্গে আমার স্বামীর একটি ছোটখাটো ঘটনা ঘটেছিল৷ কিন্তু তার জন্য এতদিন পর ওরা যে এত বড় কাণ্ড ঘটাবে, সেটা কখনও ভাবতে পারিনি৷ তবে স্বপন শর্মার সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক ছিল না৷ আমার স্বামীর সঙ্গে ওর কোনও ঝামেলা ছিল কিনা তাও জানি না৷’



এনিয়ে এদিন বিস্ফোরক মন্তব্য করেন ইংরেজবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী৷ তিনি বলেন, ‘নন্দু তিওয়ারি যে বাবলা সরকারকে খুনের ষড়যন্ত্রে জড়িত তা আগেই জানতাম৷ ২০২২ সালে ভোটের পর বাবলার সঙ্গে ওর ঝামেলা হয়৷ তখন থেকেই ও অনেককে বলেছে, সুযোগ পেলে ও বাবলাকে খুন করবে৷ সেকথা পুলিশকে নিশ্চয়ই কেউ না কেউ বলেছে৷ আসলে নন্দু ও তার পরিবার গোটা ঝলঝলিয়া এলাকা দখল করতে চেয়েছিল৷ কিন্তু বাবলা ওর ঘরে গিয়ে ভোটে জিতে আসে৷ ফলে ওদের এলাকা দখলের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়৷ তখন থেকেই বাবলাকে সরানোর পরিকল্পনা করছিল নন্দু৷ দলে থেকে কেউ এমন কাজ করলে তাকে কিছুতেই মাফ করা যায় না৷ আর স্বপন সরকার একজন ভাড়াটে খুনি৷ সিপিএম নেতা শৈলেন সরকারের ডান হাত ছিল৷ শৈলেন সরকারের নির্দেশে অনেককে খুন করেছে৷ আমাকেও অনেকবার খুনের চেষ্টা করেছে৷ একবার আমাকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে৷ আমি বেঁচে গেলেও আমার এক বন্ধু মারা যায়৷ নিতাই নামে একটি ছেলেকে খুনের দায়ে এখনও ওর বিরুদ্ধে মামলা চলছে৷ জামিন পেয়ে জেলের বাইরে আছে৷ ফলে ওর পক্ষে এই ঘটনা ঘটানো অসম্ভব নয়৷ তবে এর পিছনে আরও বড় মাথা রয়েছে৷ তার নাম কিংবা কোন দল করে, সেটা সংবাদমাধ্যমকে বলব না৷ তবে দিদিকে জানাব৷’


পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব জানিয়েছেন, ‘দুলাল সরকার খুনকাণ্ডে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ ধৃতদের নাম নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি ও স্বপন শর্মা৷ ধৃতদের আজ জেলা আদালতে পেশ করা হয়েছে৷ এই মামলায় এখনও পর্যন্ত মোট সাতজনকে গ্রেফতার করা হল৷ গোটা ঘটনা নিয়ে পুলিশি তদন্ত জারি রয়েছে৷’


আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

Kommentarer


বিজ্ঞাপন

Malda-Guinea-House.jpg

আরও পড়ুন

bottom of page