ডিজির সঙ্গে দেখা চৈতালি-কৃষ্ণেন্দুর, একাধিক প্রশ্ন পুলিশ মহলেই
রাজ্য পুলিশের সর্বময় কর্তাকে একান্তে কী জানালেন দুলাল জায়া চৈতালি? জেলা পুলিশ মহলে এখন সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে৷ একই প্রশ্ন আবর্তিত হচ্ছে তৃণমূলের অন্তঃপুরেও৷ যদিও এনিয়ে চৈতালি সংবাদমাধ্যমকে এখনও কিছু জানাননি৷ শুক্রবার রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারের মালদা সফরে আরও আলোচিত বিষয় হচ্ছে সার্কিট হাউসে কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরির সঙ্গে আলোচনা৷ তবে কৃষ্ণেন্দুবাবুকে তলব করা হয়েছিল, নাকি উনি নিজে এসেছিলেন এনিয়ে রহস্য বজায় রেখেছন খোদ চেয়ারম্যানই৷
বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে উপস্থিত সংবাদমাধ্যমকে ইসলামপুরে পুলিশের উপর আক্রমণের ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন রাজীব৷ জানিয়েছিলেন, একটি গুলির উত্তরে চারটি গুলি ছোড়ার ক্ষমতা রাখে পুলিশ৷ এই কাজে পুলিশকর্মীরা প্রশিক্ষিত৷ রাজ্য পুলিশের ডিজির বক্তব্যে কোথাও যেন তেলেঙ্গানার এনকাউন্টার স্পেশালিস্ট ভিসি সজ্জনরের ছায়া লক্ষ্য করা গিয়েছিল৷ সবাই ভেবেছিলেন, মালদার সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়েও তেমনই কড়া কোনও প্রতিক্রিয়া দেবেন তিনি৷ কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি৷ এই জেলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে জেলা পুলিশের উপরেই যে তাঁর অগাধ আস্থা রয়েছেন, কার্যত সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন৷
এদিন সড়কপথে শিলিগুড়ি থেকে মালদা পৌঁছোন ডিজি৷ সোজা চলে যান জেলা পুলিশ অফিসে৷ প্রথমে পুলিশকর্তাদের নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ বৈঠক করেন৷ সেখানেই ডেকে পাঠানো হয় শুটআউটে নিহত তৃণমূল নেতা দুলাল সরকারের স্ত্রী চৈতালি ঘোষ সরকারকে৷ চৈতালির সঙ্গে প্রায় ৩০ মিনিট রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন রাজীব৷ তাঁর সঙ্গে কথা বলে বেরিয়ে যান চৈতালি৷ কিছুক্ষণ পর পুলিশ সুপারের বাংলোর দিকে রওনা দেন ডিজিও৷ সেখানে মধ্যাহ্নভোজ সেরে তিনি কালিয়াচকের উদ্দেশ্যে রওনা দেন৷ এদিন সন্ধেতেই বন্দেভারত এক্সপ্রেসে তাঁর কলকাতা ফিরে যাওয়ার কথা৷

একান্তে কী আলোচনা হল তা নিয়ে সংবাদমাধ্যমকে কিছু জানাতে চাননি চৈতালি৷ রাজীব কুমার শুধু জানান, ‘মালদার সাম্প্রতিক দুটি ঘটনায় জেলা পুলিশ ভালোভাবেই কাজ করছে৷ তারা তদন্ত চালাচ্ছে৷ তদন্তও সঠিকভাবে এগোচ্ছে৷ এসব নিয়ে যা বলার পুলিশ সুপার বলবেন৷’
তবে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যাচ্ছে, এদিন রাজীব কুমারকেও চৈতালি তাঁর সন্দেহের কথা জানিয়েছেন৷ প্রথম থেকেই তিনি বলে আসছেন, নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি কিংবা স্বপন শর্মা তাঁর স্বামীকে হত্যাকাণ্ডের মূল চক্রী নন৷ এর পিছনে আরও বড় মাথা রয়েছে৷ এক বা একাধিক মাথাও থাকতে পারে৷ কিন্তু ক’দিন আগে কলকাতায় এক সাংবাদিক বৈঠকে এডিজি সুপ্রতিম সরকার যখন ঘোষণা করেন, এই ঘটনায় মূল চক্রী নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি ও স্বপন সরকারই, তখন অনেকের মতো চৈতালির মনেও সন্দেহ দানা বাঁধে, তবে কি এই ঘটনায় পুলিশি তদন্ত আর এগোবে না? মূল তিন অভিযুক্ত ধরা পড়ার আগেই পুলিশ এই মামলার তদন্ত ফাইল বন্ধ করতে চাইছে? জানা যাচ্ছে, এদিন ডিজি চৈতালিকে আশ্বস্ত করেছেন, এই ঘটনার শেষ দেখা হবে৷ তদন্ত জারি রয়েছে৷ চলবেও৷ মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের তেমনটাই নির্দেশ দিয়েছেন৷
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
Comments