top of page

সীমান্তে উত্তেজনা, রাত জাগছে সুকদেবপুর

দেশরক্ষায় রাত জাগছে সুকদেবপুর৷ বিএসএফ-এর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের জবাব দেওয়ার প্রহর গুনছেন সীমান্ত এলাকার ভারতীয়রা৷ তাঁদের অভিযোগ, মহম্মদ ইউনূস অরক্ষিত সীমান্ত দিয়ে জঙ্গি ঢুকিয়ে ভারতবর্ষে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চাইছেন৷ অনুপ্রবেশ করিয়ে ভারতকে নড়বড়ে করে দিতে চাইছেন৷ সেটা তাঁরা হতে দেবেন না৷


ইন্দো-বাংলা সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া নিয়ে গত ৯ জানুয়ারি থেকেই উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে মালদা জেলার কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকের সুকদেবপুর৷ নিরাপত্তার স্বার্থে ভারত সরকার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দিতে শুরু করতেই ওপার বাংলা থেকে বাধা আসে৷ বাংলাদেশি লোকজন ১০ জানুয়ারি সীমান্তে ভারতীয়দের আক্রমণ করে৷ বিজিবির তরফে দাবি করা হয়, যে জায়গায় বেড়া দেওয়া হচ্ছে সেটা বিতর্কিত এলাকা৷ বিজিবির বাধায় বেড়া দেওয়ার কাজ স্থগিত হয়ে যায়৷ এনিয়ে গত ২২ জানুয়ারি বাংলাদেশের সোনা মসজিদ এলাকায় দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়৷ বৈঠকে বিজিবির রাজশাহি সেক্টর এবং বিএসএফ-এর মালদা সেক্টরের আধিকারিকরা অংশ নেন৷ সেই বৈঠকে দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীই সীমান্ত সুরক্ষার বিষয়ে একমত হয়৷ ওই বৈঠকে বিএসএফ-এর তরফে জমির নকশা দেখিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, যে জমিতে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কাজ চলছে, সেই জমি সম্পূর্ণভাবে ভারতের মধ্যে পড়ে৷ কিন্তু তারপরেও প্রতিবেশী দেশের বাধায় বেড়া দেওয়ার কাজ শুরু করতে পারেনি ভারত৷


প্রতীকী ছবি।
প্রতীকী ছবি।

মূল সীমান্তবেড়া তৈরি না হওয়ায় বিএসএফ সিদ্ধান্ত নেয়, ভারতীদের গবাদি পশু যাতে কোনওভাবে বাংলাদেশে চলে না যায় কিংবা সেদেশ থেকে কোনও অনুপ্রবেশের ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য সীমান্ত সংলগ্ন রাস্তার নীচে একটি অস্থায়ী নীচু বেড়া দেওয়া হবে৷ সেই কাজে হাতও দেওয়া হয়৷ কিন্তু এবারও বিজিবির তরফে বাধা আসে৷ এতেই ক্ষিপ্ত সুকদেবপুর গ্রামের মানুষজন৷ কেন অরক্ষিত ৬০০ মিটার সীমান্তে নিজেদের জমিতে অস্থায়ী বেড়া দেওয়া যাবে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা৷


সুকদেবপুরের বাসন্দা মহাদেব মণ্ডল বলছেন, ‘ওই ৬০০ মিটার অরক্ষিত সীমান্ত দিয়ে মাঝেমধ্যেই চোরাপাচার হয়ে থাকে৷ আমাদের গোরু-ছাগল ওপারে চলে যায়৷ আর ফিরে আসে না৷ ওই এলাকা দিয়ে এদেশে ঢুকতে গিয়ে এর আগে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি ধরাও পড়েছে৷ ওরা চাইছে, এই ফাঁকা এলাকা দিয়ে ওরা আমাদের দেশে জঙ্গি ঢুকিয়ে দেবে৷ অনুপ্রবেশ করাবে৷ এদেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে৷ সেকারণেই বিএসএফ সেখানে অস্থায়ী বেড়া দেওয়ার কাজ শুরু করেছিল৷ ওরা প্রতিদিন আমাদের জমির ফসল কেটে নিয়ে যাচ্ছে৷ বিজিবি নিজেদের দেশের দুষ্কৃতীদের কিছু বলে না৷ আসলে মহম্মদ ইউনূস চাইছেন, অরক্ষিত সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের ঢুকিয়ে এদেশে অশান্তি সৃষ্টি করবেন৷ কিন্তু আমরা সেটা হতে দেব না৷ নিরাপত্তার দিকে তাকিয়ে নিজেদের জমিতে আমরা বেড়া দেবই৷ আমরা বিএসএফ-এর সঙ্গে আছি, থাকব৷ দেশ আমাদের কাছে সবার আগে৷ দেশ বাঁচাতে আমরা গ্রামের সবাই পালা করে রাত জাগতে শুরু করেছি৷’ একই বক্তব্য শিবলাল মণ্ডল, মহম্মদ আতাউল্লাহদেরও৷ তাঁদের মুখেও আগে দেশ, পরে অন্য কিছু৷


গ্রামবাসীদের জাতীয়তাবোধ দেখে উদ্বুদ্ধ সীমান্তে প্রহরারত বিএসএফ জওয়ানরা৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আধিকারিক জানালেন, ‘গ্রামবাসীদের দেশভক্তি আমাদের জওয়ানদেরও উৎসাহ জোগাচ্ছে৷ এলাকার মানুষ আমাদের কথা শুনে চলছেন৷ সাম্প্রতিক ঝামেলার জেরে সীমান্ত রাস্তায় তাঁদের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে৷ তবে কৃষকরা নিজেদের জমিতে চাষ করতে যাচ্ছেন৷ নতুন করে আর তেমনকিছু ঘটেনি৷ তবে আমরা সতর্ক রয়েছি৷ গ্রামবাসীদের বলা হয়েছে, কোনও প্ররোচনায় তাঁরা যেন পা না দেন৷’


আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

Comments


বিজ্ঞাপন

Malda-Guinea-House.jpg

আরও পড়ুন

bottom of page