দীপাবলীর আলোয় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ছবি মালদায়
ফের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির মালদায়। এক ভবঘুরের জীবন দুই সম্প্রদায়কে এক হতে শেখাল। ২৬ বছর ধরে ওই ভবঘুরেকে দেখাশোনার করার পর শেষকৃত্যতেও একসঙ্গে এগিয়ে আসতে দেখা গেল দুই সম্প্রদায়কে। ঘটনাটি ইংরেজবাজারের যদুপুর এলাকার।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৯৭ সালে যদুপুর এলাকায় হঠাৎ এক ভবঘুরেকে দেখা যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা ওই ব্যক্তিকে নাম পরিচয় জিজ্ঞাসা করলেও তিনি কিছু জানাতে পারেননি। শুধু মাঝেমধ্যে হিন্দি ভাষাতে দুর্গা শব্দ শোনা যেত তাঁর মুখে। এরপর ওই এলাকার দুই সম্প্রদায় ওই ব্যক্তির দেখভাল শুরু করে। খাবার দেওয়া, জামাকাপড় দেওয়া সবই করতেন স্থানীয় লোকজন। ২৬ বছর ধরে ওই এলাকায় থাকতে থাকতে ওনার সঙ্গে সকলের সম্পর্ক তৈরি হয়ে উঠেছিল।
স্থানীয় বাসিন্দা মোহম্মদ রানাউল ইসলাম জানান, ১৯৯৮ সালের বন্যার আগে তিনি এলাকায় এসেছিলেন। কোথায় বাড়ি, নাম কি সেসব কিছুই বলতে পারেননি তিনি৷ হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন৷ গত পরশু রাত আমরা তাঁকে মালদা মেডিকেল কলেজে ভরতি করি৷ অবশেষে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ওনার। বিষয়টি প্রশাসন ও গ্রামপঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ওনার মৃতদেহ শ্মশানে যাচ্ছি৷ যেহেতু উনি দুর্গা বলতেন, তাই হিন্দু শাস্ত্রমতে শ্মশানেই ওনার সৎকার্য করা হবে৷ আমরা দুই সম্প্রদায়ের মানুষ মিলেই ওনার শ্রাদ্ধের যাবতীয় অনুষ্ঠান সম্পন্ন করব৷
আরেক গ্রামবাসী বেচন ঘোষ জানান,
বন্যার আগে এখানে এসেছিলেন উনি৷ এতদিন ধরে এখানে থাকতে থাকতে উনি আমাদেরই একজন হয়ে গিয়েছিলেন৷ কয়েকদিন আগে ওনাকে কুকুরে কামড়ায়। এরপরেই তিনি অসুস্থ হয়ে যান৷ আমরা ওনাকে হাসপাতালে ভরতি করি। অবশেষে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওনার মৃত্যু হয়। আমরা হিন্দু-মুসলিম সবাই মিলে ওনার মৃতদেহ শ্মশানে নিয়ে যাচ্ছি৷ পরবর্তীতে আমরা একত্রিত হয়ে ওনার শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করব।
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
תגובות