top of page

বরাত নেই সরস্বতী প্রতিমার, খাঁ খাঁ করছে মৃৎশিল্পীর কারখানা

জেলায় করোনার গ্রাফ এখন উপরের দিকে তরতর করে এগিয়ে চলেছে। এখনই গ্রাফ নীচে নেমে আসার কোনও সম্ভাবনাই দেখতে পাচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা। সেই ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফের ছায়ায় এবার ঢাকা পড়তে চলেছে বাঙালির বসন্ত উৎসবও। হাতে গোনা আর ক’টা দিন পরেই সরস্বতীপুজো। কিন্তু এবার সেই পুজো কতটা পড়ুয়াদের মধ্যে সাড়া ফেলবে, তা নিয়ে চিন্তা রয়েছে মালদার কুমোরটুলিতে। এখনও পর্যন্ত স্কুলগুলি প্রতিমা তৈরির বরাত সেভাবে দেয়নি। ক্লাবগুলিও এবার নিজেদের পুজো ছোটো করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মৃৎশিল্পীরা বলছেন, এসবই করোনার প্রভাব। হাতে আর যে কয়েকটি দিন রয়েছে, তাতে আর বড়ো প্রতিমা তৈরি করা সম্ভব নয়। এবার করোনার গ্রাসে চলে যেতে বসেছে বাগদেবীর আরাধনাও।


Covid impact on saraswati puja artisans in malda
করোনার ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফের ছায়ায় এবার ঢাকা পড়তে চলেছে বাঙালির বসন্ত উৎসবও

মালদা শহরে মৃৎশিল্পীদের অন্যতম টুবাই হালদার। বয়স কম হলেও এর মধ্যেই শিল্পকর্মে জেলায় নামডাক বেশ হয়েছে তাঁর। তিনি জানালেন, ‘গতবার ৮০টি সরস্বতী প্রতিমা তৈরি করেছিলাম। সব বিক্রি হয়ে যাওয়ার পরেও মানুষ প্রতিমা কিনতে এসেছিল। গতবার ১৪-১৫টি স্কুল, মালদা কলেজ, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিমাও তৈরি করেছিলাম। কিন্তু এবার কোনও স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে প্রতিমার বায়না আসেনি। ৫-৭টা বাড়ির প্রতিমার বরাত পেয়েছি। সব ছোটো প্রতিমা। তবু আশায় ভর করে এবার ৪০টি প্রতিমা বানাচ্ছি। সব বিক্রি হবে কিনা বলতে পারছি না।’

শহরের আরেক মৃৎশিল্পী অষ্টম চৌধুরির দশা আরও খারাপ। এখনও শুনসান তাঁর কারখানা। দু’চারটি ছোটো প্রতিমার বরাত পেয়েছেন। তাই কারখানার শ্রমিকদের আর কাজে লাগাননি। জানালেন, ‘এই ক’টা প্রতিমা তৈরিতে শ্রমিক নিয়োগ করলে তাদের মজুরি দেওয়াই সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। গতবার বেশ কয়েকটি স্কুল ও ক্লাবের প্রতিমা তৈরি করেছিলাম। এবার সেসব জায়গা থেকে কোনও বরাত আসেনি। রেডিমেড প্রতিমা বিক্রি করে লাভ তেমন হয় না। এবার রেডিমেড প্রতিমা বিক্রি হওয়া নিয়েও চিন্তা রয়েছে। করোনা এবার সরস্বতীপুজোটাকেই মাটি করে দিল। ভাগ্য ভালো, দুর্গাপুজোর সময় করোনার তৃতীয় ঢেউ আসেনি। নইলে আমাদের না খেয়ে মরতে হত।’

মৃৎশিল্পী রাজকুমার পণ্ডিতও পরিস্থিতির জন্য করোনাকে দায়ী করছেন। এবার বেশ কিছু প্রতিমা বানালেও তাঁর কাছেও স্কুলের তেমন বরাত নেই। তাঁর অনুমান, করোনার দাপটে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় বরাত আসেনি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে এবার ছোটো করেই পুজো হবে বলে ধারণা করছেন তিনি। পড়ুয়ারা প্রয়োজনে বাড়িতে পুজো করবে। বাড়িতেই অঞ্জলি দেবে।




শিল্পীদের আশঙ্কা যে অমলুক নয় তার প্রমাণ মিলেছে পুরাতন মালদা কালাচাঁদ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রাহুলরঞ্জন দাসের গলায়। তিনি বলেন, ‘করোনার জন্য স্কুল আবার বন্ধ। আর সরস্বতীপুজো মূলত ছাত্রছাত্রীদেরই পুজো। স্কুল না খুললে ছোটো করে পুজো করে কোনওরকমে নিয়ম রক্ষা করব। আর সরকার যদি এর মধ্যে স্কুল খোলার নির্দেশ দেয়, তাহলে ধুমধাম করেই পুজো হবে।’


আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

Comments


বিজ্ঞাপন

Malda-Guinea-House.jpg

আরও পড়ুন

bottom of page