top of page

প্রৌঢ়ের যৌন নির্যাতনের শিকার নাবালিকা

দশ বছরের শিশু কন্যাকে শারীরিক নির্যাতন করার অভিযোগে এক প্রৌঢ়কে গ্রেপ্তার করলো ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে ইংরেজবাজার ব্লকের বিনোদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মানিকপুর গ্রামে। ধৃত ব্যক্তির নাম আশু মাঝি।


শিশুটির পরিবার সূত্র থেকে জানা গেছে নির্জন দিঘির পাড়ে ছাগল নিয়ে খেলা করছিল শিশু কন্যাটি। সেই সময় আশু মাঝি নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি চকলেটের প্রলোভন দিয়ে শিশু কন্যাটির উপর শারীরিক নির্যাতন করে। শিশুটির চিৎকারে এলাকাবাসীর নিকট বিষয়টি দৃশ্যমান হয়ে যায়। ঘটনার পর গ্রামের একটি ক্লাবের সদস্যরা সালিশী সভা ডেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে দুই হাজার জরিমানা ধার্য করে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করে। কিন্তু এইভাবে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার আপত্তি জানিয়ে ইংরেজবাজার থানার পুলিশের দারস্থ হয় নির্যাতিতা শিশুর পরিবার। পুলিশ অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্ত আশু মাঝিকে গ্রেপ্তার করে।



নির্যাতিতা শিশু খানিকটা মানসিক ভারসাম্যহীন। বাবা ৭ বছর আগে মারা গিয়েছেন। তারা তিন বোন। সে বড়ো। মা বিড়ি বাঁধার পাশাপাশি ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালান। প্রতিদিনের মতো সোমবার সকালেও তিনি কাজে বেরিয়ে যান। দুপুরে বাড়ির পোষ্য একটি ছাগলকে এলাকারই একটি দিঘির পাড়ে চরাতে নিয়ে যায় ওই নাবালিকা।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিঘিটি পাহারাদারির কাজে নিযুক্ত রয়েছে এলাকারই বাসিন্দা আশু মাঝি নামে এক ব্যক্তি। তার বয়স ৫৮ বছর। তার স্ত্রী ও দুই ছেলে। দুই ছেলেই বিবাহিত। নির্জন দুপুরে ওই শিশুটিকে একা দিঘির পাড়ে দেখতে পেয়ে তার মাথায় শয়তান ভর করে। চকোলেটের লোভ দেখিয়ে সে ওই নাবালিকাকে কাছেই একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে শিশুর উপর যৌন নির্যাতন চালায় সে। যন্ত্রণায় চিৎকার শুরু করে শিশুটি। সেই সময় ওই পরিত্যক্ত বাড়ির কাছেই বিড়ি বাঁধছিলেন এলাকারই এক যুবতি। চিৎকার শুনে তিনি কৌতুহলবশত ওই বাড়িটির কাছে যান। ভিতরের দৃশ্য দেখে চিৎকার করতে করতে তিনি সেখান থেকে দৌড়ে পালান। তাঁর চিৎকারে ভয় পেয়ে আশু ওই শিশুটিকে ছেড়ে দেয়। শিশুটি ছাগল নিয়ে বাড়ি ফিরে যায়। সন্ধেয় কাজ থেকে বাড়ি ফিরলে সে সব ঘটনা তাঁকে খুলে বলে। তার মা বিষয়টি জানান গ্রামবাসীদের। খবর পায় স্থানীয় একটি ক্লাবও। ওই ক্লাবের সদস্যদের উদ্যোগে রাতে এলাকায় বসে সালিশি সভা।

শিশুটির মায়ের অভিযোগ, ওই ক্লাবের সদস্যরা এই ঘটনার জন্য আশুকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করে। কিন্তু সেই জরিমানার টাকার মধ্যে তাঁকে ১ হাজার টাকা দেওয়া হয়, বাকিটা রেখে দেয় ক্লাব। এরই মধ্যে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় বিশাল পুলিশবাহিনী। পুলিশ আশুকে গ্রেফতার করে। তাঁর মেয়েকেও উদ্ধার করে। প্রথমে তিনি মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে এই ঘটনা পাঁচকান করতে চাননি। কিন্তু পুলিশ যখন নিজে থেকেই গ্রামে চলে আসে, তখন তিনি আশুর কড়া শাস্তি দাবি করছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল সালিশি সভা চলাকালীন গ্রামেরই এক বাসিন্দা ইংরেজবাজার থানার আইসিকে ফোন করে গোটা ঘটনা জানান। ফোন পেয়েই আইসি বিশাল পুলিশবাহিনী এলাকায় পাঠিয়ে দেন। সালিশি সভা থেকেই আটক করা হয় অভিযুক্ত আশু মাঝিকে। উদ্ধার করা হয় নির্যাতিতাকেও। এদিন সকালে নির্যাতিতার মা এই ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পরেই আশুকে গ্রেফতার করা হয়। নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তাকে এদিন জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তার জেল হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। নির্যাতিতা শিশুটি আপাতত সরকারি হোমে পাঠানো হয়েছে।


আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

Comments


বিজ্ঞাপন

Malda-Guinea-House.jpg

আরও পড়ুন

bottom of page