সাফল্যের নতুন পালক মালদা মেডিকেলের মুকুটে
চিকিৎসাশাস্ত্রে আবার বিরাট সাফল্য পেল মালদা মেডিকেলের কলেজ। বিনা অস্ত্রোপচারে ৬ বছরের এক নাবালিকার খাদ্যনালীতে আটকে থাকা একটি কয়েন বের করলেন মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকরা। বর্তমানে ওই নাবালিকা সুস্থ রয়েছে। মালদা মেডিকেল কলেজে এই ঘটনা প্রথম বলে জানা গিয়েছে।
৬ বছরের ওই নাবালিকার নাম সালমা আফরোজ৷ বাড়ি পুরাতন মালদার যাত্রাডাঙা গ্রামে৷ বাবা হাসিউর রহমান পেশায় শ্রমিক৷ মা জ্যোতিকা খাতুন গৃহবধূ। তাঁদের দুই ছেলেমেয়ে৷ সালমা বড়ো৷ হাসিউর সাহেব জানান, গতকাল বেলা ৩টে নাগাদ তিনি কাজ সেরে বাড়ি ফেরেন৷ সেই সময় তাঁর মেয়ে ঘরে ঘুমিয়ে ছিল৷ তার পাশেই বিছানায় পড়ে ছিল একটি কয়েন৷ ঘুম থেকে উঠে মেয়ে এক টাকার সেই কয়েনটি মুখে দিয়েছিল৷ তখনই কয়েনটি তাঁর গলায় চলে যায়৷ সেটি মেয়ের খাদ্যনালীতে আটকে যায়৷ মেয়ের চিৎকারে তাঁরা ছুটে যান৷ তাঁর স্ত্রী আঙুল দিয়ে কয়েন বের করার চেষ্টা করেন৷ যদিও সেই চেষ্টা সফল হয়নি৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় তাঁরা মেয়েকে মালদা মেডিকেল কলেজে নিয়ে আসেন৷ এখানে চিকিৎসকরা জানান, অপারেশন করে মেয়ের গলা থেকে কয়েন বের করতে হবে৷ এদিন চিকিৎসকরা বিনা অপারেশনেই তাঁর মেয়ের গলা থেকে কয়েনটি বের করেছেন৷ মেয়ে এখন সুস্থ রয়েছে৷ তিনি চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
সালমার খাদ্যনালী থেকে কয়েন বের করার নেতৃত্বে ছিলেন মালদা মেডিকেলের ইএনটি বিভাগের সহকারী প্রফেসর অতীশ হালদার৷ তাঁর সঙ্গে ছিলেন কণিষ্ক চৌধুরি, অর্পিতা লাহা সহ আরও দুই চিকিৎসক৷ অতীশবাবু বলেন, গতকাল সালমাকে তাঁদের কাছে নিয়ে এসেছিলেন অভিভাবকরা৷ দেখা যায়, তার খাদ্যনালীতে কয়েনটি আটকে যায়৷ ফলে বাচ্চাটি আর খাবার খেতে পারছিল না৷ কিন্তু যেহেতু তখন তার পেটে খাবার ছিল, তাই সেই মুহূর্তে তার অপারেশন করা যায়নি৷ অন্তত ৬ ঘণ্টা খালি পেটে না থাকলে অপারেশন করা বিপজ্জনক হতে পারে৷ তাই এদিন তাঁরা ইসোফেগোস্কপি করে প্রায় ৩০ মিনিটের চেষ্টায় ওই বাচ্চাটির গলা থেকে কয়েনটি বের করেছেন৷ এর জন্য তাঁদের কোনরকম কাটাছেঁড়া করতে হয়নি৷ কিছুদিন আগেই মালদা মেডিকেলে এই পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে৷ অতীশবাবু জানান, সালমা এখন সম্পূর্ণ সুস্থ ৷
জানা গিয়েছে, কিছুদিন আগে মালদা মেডিকেলে ইসোফেগোস্কপির পরিকাঠামো তৈরি হলেও এতদিন প্রয়োগ করা হয়নি। এদিনই তার প্রথম ব্যবহার হয়েছে৷ সালমার গলা থেকে সফলভাবে কয়েন বের করার ঘটনায় খুশি মেডিকেলের অন্যান্য চিকিৎসকরাও৷
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
ভিডিয়োঃ কৃতাঙ্ক
Comments