চিকিৎসকদের গড় হাজিরা রুখতে রাজ্যের প্রতিটি মেডিকেল কলেজের সঙ্গে মালদা মেডিকেল কলেজেও চালু হচ্ছে বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি। ইতিমধ্যেই হাজিরায় কড়া পদক্ষেপ নেওয়ায় চাকরি ছেড়ে চলে গিয়েছেন একাধিক চিকিৎসক। এবার বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি চালু হলে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে, তা নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন উঠেছে।
গত ৫ জুন থেকে রাজ্যের মেডিকেল কলেজগুলিতে বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি চালু হয়ে গিয়েছে। সেসব কলেজে বায়োমেট্রিক হাজিরা পরিসেবা এখনো নেই, সেই কলেজগুলিতে কাজ চলছে জোরকদমে। মালদা মেডিকেলেও দ্রুতগতিতে সেই কাজ চলছে। দিন দুয়েকের মধ্যেই সেই কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে মেডিকেল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে। আর কাজ শেষ হলেই জুলাই মাস থেকে বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি চালু হয়ে যাবে মালদা মেডিকেল কলেজেও। যার আওতায় আসবেন অধ্যাপক, চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী এমনকি অস্থায়ী কর্মীরাও।
মালদা মেডিকেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে মালদা মেডিকেলে শিক্ষক চিকিৎসক রয়েছেন ১৬০ জন৷ এর সঙ্গে সাধারণ চিকিৎসক, নার্স সহ স্বাস্থ্যকর্মীদের যোগ দিলে সংখ্যাটি প্রায় ৯০০৷ ১৬০ জন শিক্ষক চিকিৎসকের কেউই সপ্তাহে একদিন বা দু’দিনের বেশি মালদায় থাকেন না৷ অবশ্য এটা প্রথম নয়, মেডিকেল কলেজ চালু হওয়ার পর থেকেই এই ব্যবস্থা চলে আসছে৷ সেকথা জানে মেডিকেল কর্তৃপক্ষও৷ কিন্তু সব জেনেও চুপ কর্তৃপক্ষ৷ কারণ, এর আগে এই সব শিক্ষক চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কড়া মনোভাব নিয়েও পিছিয়ে আসতে হয়েছে মেডিকেল কর্তৃপক্ষকে৷ হাজিরা নিয়ে কড়াকড়ি করলেই ইস্তফা দিয়ে চলে যাওয়ার রেওয়াজ চালু আছে এখানে৷ এর আগে ৩১ জন শিক্ষক চিকিৎসক শুধুমাত্র হাজিরায় কড়াকড়ি করার কারণে কাজ ছেড়ে চলে গিয়েছেন৷ অনেকে আবার নিজেদের ইস্তফাপত্রও জমা দেননি৷ তবে এবারে বেশ কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চলেছে স্বাস্থ্যভবন।
এপ্রসঙ্গে মালদা মেডিকেলের অধ্যক্ষ প্রতীপ কুণ্ডু বলেন, তিনি কাজে যোগ দেওয়ার আগে ও পরে ৩১ জন চিকিৎসক হাজিরায় কড়াকড়ি করায় কাজ ছেড়ে চলে গিয়েছেন৷ অনুপস্থিতির জন্য তাঁদের বেতনও আটকে দেওয়া হয়েছিল৷ তাঁরা সেটা মেনে নেননি৷ তবু তার মধ্যেও তাঁরা পরিসেবা চালিয়ে গিয়েছেন৷ তাঁরা মনে করেন, সমস্যা আসবেই৷ তার মধ্যেই কাজ করতে হবে৷ এখনও প্রসূতি বিভাগের প্রধান সহ ৮-৯ জন চিকিৎসক নিয়মিত কাজে আসেন না৷ স্বাস্থ্যভবনে তাঁরা গোটা বিষয়টি জানিয়েছেন৷ স্বাস্থ্যভবনের কাছে চিকিৎসকের আবেদনও জানিয়েছেন৷ সবচেয়ে বড়ো সমস্যা অ্যানাস্থেসিস ও রেডিওলজি বিভাগে৷ অ্যানাস্থেসিস বিভাগে ১৩ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন মাত্র ৬ জন৷ আর রেডিওলজি বিভাগে ১০ চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন মাত্র ৫ জন৷ সাধারণ মানুষকে যথাযথ স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে গেলে হাসপাতালে চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হাজিরার দিকেও নজর দিতে হবে বলে মনে করেন তিনি৷
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
Comentarios