শাসকদলের মদতে জুয়ার আসরের অভিযোগ হরিশ্চন্দ্রপুরে
শাসকদলের নেতাদের মদতে জুয়ার ঠেক চালানোর অভিযোগ। সেই ঠেকে জুয়া খেলে সর্বস্বান্ত হয়ে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন এক ব্যক্তি। ৯ মাস আগে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর অবর্তমানে সংসারে দুবেলা পেটের ভাত জোগাড় হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে জুয়ার ঠেক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ওই ব্যক্তির পরিবারের লোকজন৷ এদিকে, জুয়ার ঠেকে পুলিশি হানাদারির প্রতিবাদে থানা ঘেরাও করেছেন শাসকদলের নেতাকর্মীদের একাংশ। গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
হরিশ্চন্দ্রপুরের পিপলা কাশিমপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন পাণ্ডব দাস৷ পেশায় টোটো চালক ছিলেন তিনি। অভিযোগ, পাণ্ডব জুয়া খেলতেন। টোটো চালিয়ে যা ইনকাম হত, তা জুয়ায় খুইয়ে বাড়ি ফিরতেন। জুয়ার নেশাতে বাড়ির জিনিসপত্র পর্যন্ত বিক্রি করেছিলেন। মানসিক ভারসাম্যহীন স্ত্রী অপি দাস স্বামীর কর্মকাণ্ডে বিরক্ত হলেও প্রতিবাদ করতে পারতেন না। জুয়ায় সর্বস্ব খুইয়ে পাণ্ডব একসময় মদ্যপানে আসক্ত হয়ে পড়েন৷ মদের নেশায় বাড়িটা পর্যন্ত বিক্রি করে দেন তিনি৷ কপর্দকহীন হয়ে বছরখানেক আগে মৃত্যু হয় তাঁর৷
পাণ্ডবের দাদা সন্তোষ দাস জানান, ভাইয়ের স্ত্রী মানসিক ভারসাম্যহীন। দুটো বাচ্চাও জন্ম থেকে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন। মানসিক অবসাদেই ভাই জুয়া খেলত, মদ খেত৷ নেশার জন্য বাড়িটাও বিক্রি করে দিয়েছিল৷ এখন দেখছি, জুয়া খেলার প্রচার চলছে৷ এটা কেন হবে? প্রশাসন যদি জুয়া আর মদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে৷ মনে হয় পুলিশও এদের সহায়তা করছে৷ পুলিশের উচিত, জুয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া৷ নিয়মিত গ্রেপ্তারি চললে জুয়া খেলা বন্ধ হবে৷ তা না হলে ভাইয়ের মতো আরও অনেকে মারা যাবে৷
বিজেপির উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক রূপেশ আগরওয়ালা জানান, জুয়া আর মদের জন্য এলাকার বহু পরিবার নষ্ট হয়ে গিয়েছে৷ তৃণমূল পরিচালিত একটি ক্লাবে অনবরত জুয়ার আসর চলছে৷ অর্থাৎ এর পিছনে কোনও তৃণমূল নেতার মদত রয়েছে৷ সেখান থেকে যে টাকা আসছে, সেটা নিশ্চয়ই তৃণমূল নেতাদের ঘরে যাচ্ছে৷ তা না হলে নিয়মিত এত বড় আসর বসানো সম্ভব নয়৷ পুলিশ সেখানে হানা দিয়েছে৷ কিন্তু পুলিশ ভালো কাজ করলেই থানা ঘেরাও৷ পুলিশ যদি দলদাস হয়ে থাকে তাহলে আগামীতে তৃণমূলের নেতারাই থানা চালাবে৷
তৃণমূলের ব্লক যুব সভাপতি পূজন দাস জানান, পাণ্ডব দাস জুয়া খেলত, মদ্যপানও করত৷ বছর দেড়েক আগে সে মারা গিয়েছে৷ ওর মৃত্যুর সময় আমরা পাশে দাঁড়িয়েছিলাম৷ আগামীতেও ওর পরিবারকে সহযোগিতা করা হবে৷ বুধবার তৃণমূলের কেউ থানা ঘেরাও করতে যায়নি৷ বিজেপির কাজই হল কুৎসা রটানো৷ প্রচারে আসার জন্য ওরা এসব কথা বলছে৷
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
Comments