ছেলের খুনের তদন্ত চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে আর্জি
গাজোল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র জ্ঞানপ্রকাশ মণ্ডল রাত সাড়ে দশটায় বন্ধুদের ফোন পেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল, তারপর আর বাড়ি ফেরেনি সে। দুই দিন পর ছাত্রটির পরিবার ফিরে পায় তাদের স্নেহের সন্তানকে অ্যাসিডে পোড়া, ক্ষতবিক্ষত ও নিহত অবস্থায় মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মর্গে। রহস্যজনক ঘটনাটি ঘটেছে মালদা জেলার গাজোল থানার একলাখি এলাকায়। ছাত্রটির বৃদ্ধ বাবা ও মা ছেলের মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখার তদন্তের দাবি জানিয়ে খুনের অভিযোগ জানিয়েছে গাজোল থানায়। চলতি বছর অক্টোবর মাসে এমন ঘটনাটি ঘটেছে। দুই মাস ধরে বৃদ্ধ দম্পতি তাঁদের ছেলের খুনের তদন্তের দাবি জানিয়ে খুনীদের চিহ্নিত করে তাদের শাস্তির দাবি জানিয়ে গাজোল থানার পুলিশ কর্তা থেকে জেলা পুলিশ সুপার ও জেলাশাসকের দারস্থ হয়েছেন বারংবার, কিন্তু কোনও তদন্তই শুরু হয়নি। তাই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে বিচারের আর্জি জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন বৃদ্ধ দম্পতি।
ছাত্রটির বাবা অধীর মণ্ডলের দাবি এ বছর ১২ অক্টোবর তাঁর ছেলের তিন বন্ধু শুভঙ্কর মণ্ডল, সুরজিৎ মণ্ডল ও রাকেশ মণ্ডল রাত সাড়ে দশটায় ফোন করে তার ছেলেকে ডেকে নিয়ে যায়। তারপর আর বাড়ি ফেরেনি তাঁর ছেলে। পরের দিন ছেলের বন্ধুদের জিজ্ঞাসা করলেও কোন সদুত্তর না পাওয়ার ফলে গাজোল থানায় নিখোঁজের অভিযোগ করেন। কিন্তু অভিযোগ ওঠে পুলিশ কোনো সাহায্যই করেনি। এরপর এলাকার এক ভিলেজ পুলিশের মোবাইলে থাকা ছবি দেখে ছেলের খোঁজ পান তিনি এবং জানতে পারেন মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মর্গে বেওয়ারিশ মৃতদেহ হিসাবে পড়ে রয়েছে তাঁর ছেলের অ্যাসিডে ঝলসানো ক্ষতবিক্ষত বিকৃত দেহ। এরপরই গাজোল থানার পুলিশের কাছে ছেলের তিন বন্ধুর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ জানান অধীরবাবু। তাঁর অভিযোগ পুলিশ তদন্ত না করেই ঘটনাটি নিছক দুর্ঘটনা বলে জলে ডুবে মৃত্যুর কারণ বলে উল্লেখ করেছেন। যদিও অধীরবাবুর অভিযোগ বাড়ি থেকে প্রায় ১৫/২০ কিলোমিটার দূরে এক হাটু জল সমান নয়নজুলিতে ডুবে মৃত্যু সম্ভব নয়। তাছাড়া দেহটি বস্তায় বন্ধ ছিল। তিনি দাবি করেন অ্যাসিড দিয়ে তাঁর ছেলের মুখ বিকৃত করার চেষ্টা করা হয়েছে। এছাড়াও শরীরের অবস্থা ক্ষত বিক্ষত। ফলে খুন হয়েছে তার ছেলে এমনই দাবি তার। ছাত্রটির মা এই ঘটনার পিছনে বন্ধুদের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করে বন্ধুদের শাস্তির দাবি করেন। এদিকে গাজোল থানায় খুনের অভিযোগ করায় অভিযুক্তদের পরিবার থেকেও তাদেরকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করেন তিনি।
মালদা জেলা আদালতের আইনজীবি মৃত্যুঞ্জয় দাস জানান, এক্ষেত্রে পুলিশ নিরপেক্ষ ভুমিকা পালন করছে না। অভিযোগকারীর অভিযোগের তদন্ত না করে পুলিশ অভিযুক্তদের সাহায্য করছে, ফলে অভিযুক্তরা অবাধে বিচরণ করছে। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা কথা বলতে অস্বীকার করছে।
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
Comments