স্বাস্থ্যসাথী কার্ডেও মেলেনি চিকিৎসা, স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন
স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে মেলেনি চিকিৎসা। বাধ্য হয়ে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করল গোটা পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে হরিশ্চন্দ্রপুরের বারোডাঙ্গা গ্রামে।
হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের বারোডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা পিংকি দাস (২৪)। বাবা দীপক দাস পেশায় ভ্যানচালক। মা লক্ষ্মী দাস দিনমজুর। ১০ বছর আগে তুলসীহাটা গ্রামপঞ্চায়েতের মিরজাতপুর গ্রামের রঞ্জিত দাসের সঙ্গে বিয়ে হয় পিংকির। তাঁদের দুই সন্তান। পিংকির অভিযোগ, বিয়ের দুই বছর পর থেকেই স্বামী প্রচণ্ড অত্যাচার করত। স্বামী ছেড়ে দেওয়ার পরে বাধ্য হয়েই বাবার বাড়িতে চলে আসেন তিনি। জানা গিয়েছে, গত এক বছর ধরে অসুস্থ পিংকি। মাথা এবং সারা শরীরে ব্যথা সহ বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে তাঁর। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড রয়েছে তাঁদের। গত একমাস ধরে বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে ঘুরেও মেলেনি চিকিৎসা পরিসেবা। অবশেষে আজ হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের বিডিওর দ্বারস্থ হয়ে চিকিৎসার জন্য আবেদন জানান। অন্যথায় স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানান তাঁরা।
পিংকিদেবীর মা লক্ষ্মী দাস বলেন, মেয়েকে ওর শ্বশুর এবং স্বামী দেখে না। দুই সন্তান নিয়ে আমার বাড়িতেই থাকে। আমার বর ভ্যানচালক। তাতেই আমাদের সংসার চলে। চিকিৎসা করার মত সামর্থ্য নেই। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসা হচ্ছে না। তাই আজ ব্লকে বিডিওর কাছে অভিযোগ জানাতে এসেছি। সমস্যার সমাধান না হলে আমরা সকলে স্বেচ্ছা মৃত্যুবরণ করব।
হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের বিডিও অনির্বাণ বসু বলেন, একটা অভিযোগ পত্র পেয়েছি। তবে তাতে পরিষ্কারভাবে কিছু নেই। আমাদের বিস্তারিত জানতে হবে। প্রশাসন অবশ্যই পাশে দাঁড়াবে। আর যেসব হাসপাতাল স্বাস্থ্যসাথীর অন্তর্ভুক্ত সেখানে গিয়ে চিকিৎসা না পেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি মানিক দাস বলেন, ঘটনাটি সত্যি বেদনাদায়ক। আমি হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালে যোগাযোগ করেছি। আমি তাদের উপদেশ দিয়েছে কলকাতায় পিজি হাসপাতালে যেতে। আমরা সেখানে সম্পূর্ণ চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেব। অসহায় মানুষের পাশে তৃণমূল কংগ্রেস সব সময় আছে।
[ আরও খবরঃ হিন্দি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবি মালদায় ]
এই ঘটনা নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপি নেতা রূপেশ আগরওয়াল বলেন, তৃণমূল সরকারের সম্পূর্ণটাই ভাঁওতাবাজি। কেন্দ্র সরকারের আয়ুষ্মান যোজনা থেকে মানুষকে বঞ্চিত করে রেখেছে। এদিকে সংবাদমাধ্যমে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে ভুরি ভুরি অভিযোগ প্রতিদিন উঠে আসছে। আজ আমাদের হরিশ্চন্দ্রপুর বারোডাঙ্গা গ্রামের একটি পরিবার চিকিৎসা না পেয়ে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করেছে। এর থেকে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না।
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
Comments