অবিবাহিত দাবি করে আবেদন, সামনে এল কন্যাশ্রী ‘জালিয়াতি’
এবার ‘জালিয়াতি’ কন্যাশ্রী প্রকল্পে। নিজেদের অবিবাহিত দাবি করে রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকা পেতে স্কুলে আবেদন করেছিলেন মেয়েরাই। ব্লক প্রশাসনের তৎপরতায় এমনই জালিয়াতির ছবি সামনে এসেছে হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লকে। যদিও ওই পরিবারগুলির তরফে দাবি করা হয়েছে, ব্লকের এক কর্মী এবং এক পুলিশকর্মী নাকি টাকার লোভ দেখিয়ে তাঁদের আবেদন করিয়েছিলেন। যদিও তাঁদের নাম কেউই বলতে পারেননি।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকে কন্যাশ্রী প্রকল্পে আবেদনকারীদের অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল৷ এমনই অভিযোগগুলি নিয়ে ভেরিফিকেশনে বেড়িয়েছিলেন খোদ জয়েন্ট বিডিও সোনম ওয়াংদি লামা। তাঁর ভেরিফিকেশনে ১৬টি আবেদনের মধ্যে ১৪টিই ভুয়ো বলে প্রমাণিত হয়েছে৷
তিন বছর আগে বিয়ে হওয়া এক আবেদনকারীর অভিভাবকরা জানান, মাস দুয়েক আগে দু’জন গ্রামে আসে৷ ওরা জানায়, মেয়ের বিয়ে হয়ে গেলেও সরকারি টাকা পাওয়া যাবে৷ ওরাই টাকা পাইয়ে দেবে৷ তার জন্য ওরা পাঁচ হাজার টাকা দাবি করে৷ শেষ পর্যন্ত তিন হাজার টাকায় রফা হয়৷ ওরা সেই টাকা নিয়েও নিয়েছে। এরকম বিষয় জানলে ওদের চিহ্নিত করে রাখা যেত।
একই বক্তব্য আরেক বিবাহিত আবেদনকারীর পরিবারের। তাঁদের দাবি, মেয়ের বিয়ের আগে কন্যাশ্রী-১ প্রকল্পে আবেদন করা হয়েছিল। টাকাও মিলেছে৷ বিয়ের পর কন্যাশ্রী-২ প্রকল্পে আবেদন জানিয়েছি৷ ওই দু’জন আমাদের কাছ থেকে হাজার তিনেক টাকা নিয়েছে৷ তবে শুধু আমাদের নয়, গোটা গ্রামের লোকের কাছ থেকে ওরা টাকা নিয়েছে৷ ওদের আমরা চিনি না৷ বড় মেয়ের কন্যাশ্রীর টাকাও বিয়ের দু’বছর পর এসেছিল।

এদিকে, এমন ঘটনাকে ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই সমস্ত আবেদনপত্র স্কুলের তরফেই ব্লক অফিসে পাঠানো হয়। তবে কি স্কুল কর্তৃপক্ষগুলি ভেরিফিকেশন না করেই রিপোর্ট ব্লক অফিসে পাঠাচ্ছে? যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষগুলির তরফে দাবি করা হয়েছে, ছাত্রীদের অবিবাহিত সার্টিফিকেট দেয় সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত৷ সেই সার্টিফিকেট দিয়েই কন্যাশ্রী-২ প্রকল্পের টাকা নেওয়ার জন্য আবেদন করেন ছাত্রীরা৷ সমস্ত নথি আপলোড করা হয়। এখানে স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনও হাত নেই।
জয়েন্ট বিডিও সোনম ওয়াংদি লামা জানান, কন্যাশ্রী-২ প্রকল্পের আবেদনের ফিল্ড ভেরিফিকেশনে এসেছিলাম৷ এখানে অনেক আবেদনকারীকেই বিবাহিত দেখতে পেয়েছি৷ তাঁদের আবেদনপত্র বাতিল করা হবে৷ বেশ কিছু আপত্তির বিষয়ও সামনে এসেছে৷ সেসব খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
Commentaires