বাবলার অসম্পূর্ণ কাজ করবে চৈতালি: মমতা
আরজি করের ঘটনায় বিচারকের রায়ে খুশি নন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মালদায় পা রেখেই তিনি জানিয়ে দিলেন সে’কথা৷ তিনি জানান, রাজ্যের উপর এই মামলার তদন্তভার থাকলে অনেক আগেই সঞ্জয় রায়ের ফাঁসির সাজা করিয়ে দিতেন তাঁরা৷ হেলিপ্যাডে একথা বলেই তিনি সোজা চলে যান সম্প্রতি দুষ্কৃতীদের বুলেটে ঝাঁঝরা হয়ে যাওয়া তাঁর ঘনিষ্ঠ দুলাল সরকার ওরফে বাবলার মহানন্দা কলোনির ফ্ল্যাটে৷ নিহত নেতার স্ত্রীর সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ একান্তে কথা বলেন তিনি৷ সেখান থেকে বেরিয়ে জানান, বাবলার অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করবে চৈতালি৷ তাঁর এই মন্তব্যে প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলে৷ তবে কি ইংরেজবাজার পৌরসভার পরবর্তী চেয়ারপার্সন হচ্ছেন চৈতালি?
সোমবার বেলা সোওয়া তিনটে নাগাদ মুর্শিদাবাদ থেকে হেলিকপ্টারে মালদায় পৌঁছোন মুখ্যমন্ত্রী৷ মাটিতে পা রেখেই তিনি জানান, ‘শুনলাম, আরজি করের ঘটনায় দোষীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে৷ এই রায়ে আমরা খুশি নই৷ আমরা প্রথম থেকেই ফাঁসির দাবি করে এসেছি৷ আদালতের রায় নিয়ে আমার কিছু বলার নেই৷ আমি শুধু নিজের এবং দলের কথা বলতে পারি৷ এর আগে আমরা তিনটি কেসে ফাঁসির অর্ডার করিয়ে দিয়েছিলাম৷ এই কেস আমাদের হাতে থাকলে অনেক আগেই দোষীর ফাঁসির অর্ডার করিয়ে দিতাম৷ কিন্তু এই কেস আমাদের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে সিবিআইকে দিয়ে দেওয়া হয়৷ আমি জানি না, আইনজীবীরা কী যুক্তি আদালতে পেশ করেছেন৷ কীভাবে লড়াই করেছেন৷ এই নরপিচাশদের চরমতম শাস্তি হওয়া উচিত৷’
নিজের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ, নিহত তৃণমূল নেতা দুলাল সরকারের ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে মমতা সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘চৈতালির সঙ্গে কথা বলতে আজ আমি একা এসেছি৷ শুধু এসপি আর আইবির হেডকে সঙ্গে এনেছি৷ এই ঘটনায় আমি শুধু একটা কথা বলতে পারি, যে যত বড়ই হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে স্ট্রং অ্যাকশন নেওয়া হবে৷ কিছু কথা আমার কানে এসেছে৷ তবে সেসব তদন্তের বিষয়৷ এই ঘটনা নিয়ে আমি এর মধ্যে ডিজি, এসপি আর আইবির সঙ্গে কথা বলেছি৷ বাবলা আমার চিরকালের পরিচিত৷ আগে আমি সকালে ফিরে গেলে রাতে ফের মালদা ফিরে আসতাম৷ বাবলা আমাদের নিরলস কর্মী ছিল৷ মানুষের কাছে জনপ্রিয় ছিল৷ মালদার রাজনীতি ঠিক বুঝতে পারি না৷ আমরা এখানে এমএলএ-এমপি পাই না৷ কিন্তু কর্পোরেশনে জিতে যাই৷ এর মধ্যে কী রহস্য আছে আমি জানি৷ অনেক রকম খেলা চলে এখানে৷ কিন্তু এই খেলায় মানুষের পক্ষে খারাপ হয়৷’
এদিকে চৈতালি বলেন, ‘আমি তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ৷ তাঁকে আমার শ্রদ্ধা৷ নিজের ব্যস্ত শিডিউলের মধ্যেও তিনি আমার কথা মনে রেখেছেন৷ আমার কথা শুনতে আমার বাড়ি চলে এসেছেন৷ আমার শোক শেয়ার করেছেন৷ ধৈর্য ধরে আমার কথা শুনেছেন৷ আমি এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলাম৷ নিজের কথা সব তাঁকে জানিয়েছি৷ তবে এনিয়ে প্রেসের সামনে আমার কিছু বলার নেই৷ বাবলার প্রতি তাঁর যে ভরসা আর আস্থা ছিল, তিনি সেকথা বলে গেলেন৷ বাবলার অসমাপ্ত কাজ আমাকে শেষ করতে বলেছেন৷ তবে কীভাবে সেই কাজ করতে হবে, সেটা আগামীতে আরও ভালো বুঝতে পারব৷ আমি শুধু চাই, এই ঘটনায় আসল দোষীরা ধরা পড়ুক৷ তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি হোক৷ পুলিশ তাদের কাজ করছে৷ আগামীতে নিশ্চই তারা সব ঘটনা বলবে৷ আমরা তার অপেক্ষায় আছি৷’
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
Comments