প্রার্থী বাছাই নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে আহত ৭
পঞ্চায়েত নির্বাচনের যত দিন এগিয়ে আসছে ততই বেড়ে চলেছে প্রার্থী বাছাই নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। কালিয়াচকের পর এবার উত্তপ্ত মানিকচক। বৈঠকে প্রস্তাবিত প্রার্থীর মাথা ফাটিয়ে দিল আরেক গোষ্ঠীর সমর্থকরা। এই ঘটনায় দুপক্ষের ৭ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজনকে মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেল ৪টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে মানিকচক পঞ্চায়েত অফিস লাগোয়া একটি আমবাগানে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের শাঁখ বেজে উঠেছে। শুরু হয়েছে প্রার্থী বাছাই পর্ব। গতকাল বিকেলে মানিকচকের ব্লকের জালালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১১৩ নম্বর আসনের প্রার্থী বাছাই নিয়ে বৈঠক ডেকেছিল স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। বৈঠকে মুজিবর রহমানের নাম ঘোষণা করেন এলাকার তৃণমূল নেতা তথা মালদা জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল ও তাঁর অনুগামীরা। নাম ঘোষণা হতেই প্রতিবাদ করেন ওই আসনের আরেক দাবিদার সাকিলা বিবির অনুগামীরা। এই নিয়েই শুরু হয়ে যায় বাদানুবাদ। বাদানুবাদ পরিণত হয় সংঘর্ষে। লাঠি, হাঁসুয়া নিয়ে একে অপরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। হাঁসুয়ার কোপে মাথা ফেটে যায় মুজিবর রহমানের। পালটা আক্রমণে আহত হন সাকিলা বিবির অনুগামীরাও। প্রার্থী বাছাই নিয়ে বিবাদের জেরে দুপক্ষের ৭ জন আহত হন। মানিকচক গ্রামীণ হাসপাতালে ৬ জনকে প্রাথমিক চিকিত্সার পর ছেড়ে দেওয়া হলেও মুজিবর রহমানকে মালদা মেডিকেল কলেজে রেফার করে দেওয়া হয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে ছুটে আসে মানিকচক থানার পুলিশ। দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে মানিকচক থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।
ঘটনা প্রসঙ্গে জালালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সাকিলা বিবি বলেন, ‘আমি এই গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধানের দায়িত্বে রয়েছি। ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব আজ প্রার্থী বাছাই নিয়ে একটি সভা ডেকেছিল। সেখানে আমাকে বাদ দিয়ে মুজিবর রহমানকে প্রার্থীর করার কথা ঘোষণা করেন গৌর মণ্ডল ও তাঁর অনুগামীরা। এর ফলেই সভায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। কিছু লোক এর প্রতিবাদ করতে গেলে তাঁদের ওপর লাঠি, হাঁসুয়া নিয়ে চড়াও হয় গৌর মণ্ডলের অনুগামীরা। তবে আমরা কারোর ওপর হামলা চালাইনি। মাথায় ব্যান্ডেজ বেঁধে অভিনয় করছে ওরা। আমাকে বাদ দিয়ে অন্য কেউ প্রার্থী হোক তা মেনে নেন নি এলাকার লোকজন।’ অন্যদিকে আহত মুজিবর রহমান বলেন, ‘আমাকেই প্রার্থী হিসাবে চেয়েছিল এলাকার মানুষ। নাম প্রস্তাব হতেই আমার উপর হামলা চালায় সাকিলা বিবির দলবল।’ যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই গৌর মণ্ডল বলেন,‘এটা দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমরা দলের মধ্যেই মিটিয়ে ফেলব।' তবে গোটা ঘটনা নিয়ে বিরক্ত এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক তথা ব্লক সভানেত্রী সাবিত্রী মিত্র। তিনি বলেন,‘প্রার্থী বাছাই নিয়ে দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছে। রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছি। পুলিশকেও ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
Comments