ধর্মসংকটে অনেকেই, এখন খগেনের প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষা
দল ছেড়েছেন বাম নেতা৷ লাল মাটি এখন যেন খানিকটা গেরুয়া৷ ৩ বারের বিধায়ক সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে৷ কী ভাবছে বামনগোলা-হবিবপুরের আদিবাসী সমাজ? গাজোলেরই বা অবস্থান কী? আজ সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত এই সব প্রশ্নের উত্তরই খুঁজে বেড়াল মালদার রাজনৈতিক মহল৷
প্রত্যাবর্তন শব্দটা কি ৩ বারের বিধায়ক, পোড় খাওয়া সিপিএম নেতার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য!
এপ্রসঙ্গে বামনগোলার এক জাঁদরেল সিপিএম নেতা দলত্যাগী বিধায়ককে সরাসরি বেইমান আখ্যা দেন৷ তবে নিজের নাম প্রকাশ্যে আনতে চান না তিনি৷ সাংগঠনিক পার্টির সিদ্ধান্তই তাঁর শেষ কথা৷ তাই নিজের বক্তব্য প্রকাশ্যে ঘোষণা করতেও যেন তাঁর ভয়৷ যা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দল ছেড়েছেন খগেন মুর্মু ৷ ওই নেতার বক্তব্যে একটি বিষয় পরিষ্কার, তিনি কিংবা তাঁর অনুগামীরা এখনই খগেনবাবুর সঙ্গ ধরতে রাজি নয়৷ যদিও তাঁর মতো এলাকার সব সিপিএম নেতা এক নয়৷ অন্তত তিনজন নেতা এই মুহূর্তে দ্বিধায়৷ ধর্মসংকটে পড়েছেন তাঁরা৷ একদিকে দলের নীতি আর আদর্শের প্রশ্ন, অন্যদিকে রাজনৈতিক গুরুর সিদ্ধান্ত৷ যে গুরুর হাত ধরে তাঁরা রাজনীতিতে প্রবেশ করেছেন, সেই গুরুর হাত ধরে তাঁরা বিজেপিতে যাবেন কিনা ভাবছেন এখনও৷ এখন শুধু অপেক্ষা খগেনবাবুর প্রত্যাবর্তনের৷
প্রত্যাবর্তন শব্দটা কি ৩ বারের বিধায়ক, পোড় খাওয়া সিপিএম নেতার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য! রাজনৈতিক মহল বলছে, সেটাই শেষ কথা৷ যে দলের ছাত্র আন্দোলনে শামিল হয়ে রাজনীতির আঙিনায় পা রেখেছিলেন খগেনবাবু, সেই দল যে এখন পেরেস্ত্রৈকার হাওয়ায় উড়ে যাওয়ার মুখে, তার লিখন পড়তে বিন্দুমাত্র অসুবিধে হয়নি তাঁর৷ গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলই তাঁকে সেই বার্তা দিয়ে দিয়েছে৷ ফলে উভয় সংকটে পড়েছিলেন তিনি৷ একদিকে কয়েক দশকের পুরোনো দলের সঙ্গে গাঁটছড়া, অন্যদিকে নিজের রাজনৈতিক অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম৷ অনেক অংক কষেই তিনি যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে৷ যদি গেরুয়া শিবির তাঁকে উত্তর মালদা কেন্দ্রে প্রার্থী করে, তবে দলের জেলাস্তর যতই তাঁর বিরোধিতা করুক না কেন, তাঁর হয়েই ময়দানে নামতে বাধ্য হবে৷ আর যারা অবাধ্য, নিজের হাস্যমুখ দিয়ে তাদের বশ করানোর অস্ত্রটা তো তাঁর অনেক পুরোনো৷ সেটাকেই আরও একবার শান দিয়ে নেবেন৷ আর একবার লোকসভা ভোটে জিতে গেলে পরে রাস্তাটা তো আরও উন্মুক্ত হয়ে যাবে৷ তিনি বিলক্ষণ জানতেন, কংগ্রেসের টিকিট তিনি পাবেন না৷ তৃণমূল আগেই সেখানে মৌসম নূরের নাম ঘোষণা করে দিয়েছে৷ এই অবস্থায় বিজেপির ডাক তাঁর কাছে পড়ে পাওয়া চোদ্দ, থুড়ি ষোলো আনা৷
ভোটবাজারে কী হবে, তা জানতে আরও কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে৷ খগেনবাবুও এই মুহূর্তে জেলার বাইরে৷ তিনি ফিরলে বিজেপির অংকটা আরও পরিষ্কার হবে৷ তাই এই ক'দিন শুধু আশা, প্রত্যাশার দিনযাপন৷
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
Comments