মালদার মাদক যোগ! তৎপর পুলিশ
মালদা জেলায় মাদকের জাল ক্রমেই বিস্তার করছে কারবারিরা। সেই জালে পা দিয়ে অন্ধকারের গহ্বরে তলিয়ে যাচ্ছে যুব সমাজ। শুধু যুবক-যুবতীরাই নয়, কিশোর-কিশোরীরাও মাদকের নেশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে বলে বিভিন্ন জায়গা থেকে খবর পাওয়া যাচ্ছে। কৌতুহলবশত একবার এই ফাঁদে পা দিয়ে আর নেশার জাল কেটে বেরিয়ে আসতে পারছে না কেউ। বাস্তবিকই, এ’যেন ওয়ান ওয়ে ট্র্যাক। এবার এই ট্র্যাক কেটে দিতে আদাজল খেয়ে নেমেছে পুলিশ। মাদকের সাপ্লাই লাইন কেটে দেওয়াই এখন পুলিশের কাছে মূল চ্যালেঞ্জ।
মালদা জেলায় ব্রাউন শুগারের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। তবে হেরোইন কিংবা কোকেনের মতো মাদকও অল্প পরিমাণে বিক্রি হয় বলে খবর। একসময় কালিয়াচক, বৈষ্ণবনগর সহ প্রায় গোটা জেলাতেই ব্রাউন শুগারের কাঁচামাল পোস্তর চাষ হত। পোস্ত ফলের আঠা থেকে আফিম ও রাসায়নিক বিক্রিয়ায় সেই আফিম থেকে তৈরি হত ব্রাউন শুগার। বছর পাঁচেক আগেও কালিয়াচক ও সংলগ্ন এলাকায় ছিল একাধিক মাদক কারখানা। তখন জেলায় উৎপাদিত মাদক মূলত বাইরে ছড়িয়ে দেওয়া হত। দিন গড়ানোর সঙ্গে এই জেলাতেও এখন ব্রাউন শুগারের চাহিদা ক্রমবর্ধমান। যদিও লাগাতার পুলিশি হানায় জেলায় পোস্ত চাষ কিংবা ব্রাউন শুগার তৈরির কারখানা আর নেই। এই অবস্থায় বিকল্প ছক কষেছে মাদক কারবারিরা। তারা এখন ভিনরাজ্য, মূলত মণিপুর থেকে জেলায় ব্রাউন শুগার সহ অন্যান্য মাদক আমদানি করছে। ক’দিন আগেই মোথাবাড়ি এলাকা থেকে এক মণিপুরি মাদক মাফিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জেলায় মাদকের কারবার মুছে ফেলতে নীল নকশা সাজিয়েছেন খোদ পুলিশসুপার অলোক রাজোরিয়া। তাঁর প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য, জেলায় মাদকের সাপ্লাই লাইন কেটে দেওয়া। কারণ, মাদকাসক্তদের অনেক চেষ্টা করে নেশা ছাড়ালেও পরবর্তীতে তারা ফের এই জালে জড়িয়ে পড়েছে। পুলিশের কাছে এমন ভুরিভুরি উদাহরণ রয়েছে। তাই সেই লাইন কাটতে যে কোনও ধরনের মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করার জন্য প্রতিটি থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশসুপার। তাঁর নির্দেশ পেয়ে তৎপর হয়েছে প্রতিটি থানা। সেকারণেই গত এক মাসে একাধিক মাদক কারবারি পুলিশের জালে ধরা পড়েছে।
[ আরও খবরঃ স্কুলে এল করোনা পজিটিভ ক্লার্ক, আতঙ্কে চলল ক্লাস ]
সাম্প্রতিক সময় কালিয়াচক, বৈষ্ণবনগর, গাজোল, মালদা সহ বেশ কিছু থানা মাদক উদ্ধার করেছে। কোথাও দু’এক কিলো, কোথাও কয়েক গ্রাম মাদক উদ্ধার হলেও পুলিশের একাংশ জানাচ্ছে, বিপুল পরিমাণ মাদক এখনও জেলায় সংরক্ষিত রয়েছে। সেই মাদকের সন্ধানে গোপন তল্লাশিও চলছে। ইতিমধ্যে গোটা জেলায় গ্রেপ্তার হয়েছে কয়েকজন কারবারি। কিন্তু তাতে যে মাদক ব্যবসার সাপ্লাই লাইন পুরোপুরি কাটা যায়নি, তা মেনে নিচ্ছে পুলিশের একাংশ। পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানাচ্ছেন, মাদক কারবারের শিকড় উপড়ে ফেলতে তাঁরা বদ্ধপরিকর। তার জন্য যা করতে হয় করা হবে। আপাতত তাঁর আশ্বাসেই ভরসা রাখছে জেলাবাসী।
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
Comments