প্রাণ বাঁচাতে দলীয় কার্যালয়ে আশ্রয় বিজেপি প্রার্থীদের
নির্বাচনের পরেও অব্যাহত রয়েছে তৃণমূলের সন্ত্রাস, সেই সন্ত্রাসের জেরেই বিজেপির জেলা কার্যালয় রূপান্তরিত হয়েছে ত্রাণশিবিরে। এমনটাই দাবি করছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির জেলা কার্যালয়ে বর্তমানে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ২০০ জন দলীয় নেতা-কর্মী। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী প্রার্থীরাও। রয়েছেন ৩ জন অন্তঃসত্ত্বা। গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য ও জাতীয় স্তরের মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি (#BJP)।
বিজেপি নেত্রী শ্রীরূপা মিত্র জানান, ভোট গণনার দিন থেকেই জয়ী প্রার্থীরা আর বাড়িতে ফিরতে পারছেন না। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁদের বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে, তৃণমূলে যোগ না দিলে বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হবে। বাড়ির সকল সদস্যকে ঘর ছাড়া করে দেবে। এই অবস্থায় তাঁরা বাড়ি থেকে পালিয়ে দলীয় কার্যালয়ে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও রয়েছেন দলীয় কার্যালয়ে। এদের মধ্যে তিনজন অন্তঃসত্ত্বা। কিন্তু এখানেও তাঁরা সুরক্ষিত নন। যে কোন মুহূর্তে দলীয় কার্যালয়ে হামলা হতে পারে। তাই ইতিমধ্যেই অনেককে বিজেপি শাসিত অন্য রাজ্যে পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। তিনি আরো বলেন, এই রাজ্যে গণতন্ত্র বলে আর কিছুই নেই। সমস্ত বিষয়টি রাজ্য ও জাতীয় স্তরের মানবাধিকার কমিশনে জানানো হয়েছে। মানুষের মানবাধিকার রক্ষা করাই এখন তাঁদের লক্ষ্য।
বিজেপির জেলা সভাপতি সুব্রত কুণ্ডু সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, নির্বাচনের আগে যে সন্ত্রাস শুরু হয়েছিল তা এখনো বজায় রয়েছে। এমন সন্ত্রাস ইতিহাসকে হার মানিয়ে দিয়েছে। পুলিশ প্রশাসন ও তৃণমূল মিলিতভাবে এই সন্ত্রাস চালাচ্ছে। শাসকদলের অত্যাচারে তাঁদের জয়ী প্রার্থীরা বাড়িতে যেতে পারছেন না। প্রাণ ভয়ে অনেকে আশ্রয় নিয়েছেন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে, বেশিরভাগই এসে উঠেছেন দলীয় কার্যালয়ে।
যদিও বিজেপির সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, মালদায় এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। বিজেপি প্রথম থেকেই ছক কষেছিল কি করে তৃণমূল কংগ্রেস ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মানুষের চোখে বিষ করে তোলা যায়। সন্ত্রাস সৃষ্টি করে রাজ্যে ৩৫৬ ধারা জারি করার চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। মনোনয়ন থেকে গণনা পর্যন্ত কোথাও কোনো সন্ত্রাস হয়নি। দু-একটা ছোটো ঘটনা সমস্ত নির্বাচনেই ঘটে থাকে। সন্ত্রাসের নাম করে মুখ রক্ষার চেষ্টা করছে বিজেপি।
বিজেপি কার্যালয়ে পা রাখতেই যেন ত্রাণ শিবিরের গন্ধ পাওয়া গেল। ৪টি ঘরে গাদাগাদি করে রয়েছেন বিজেপির জয়ী প্রার্থী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেই রয়েছেন কার্যালয়ে। রয়েছেন বামনগোলার জেলা পরিষদ আসনে নির্বাচিত সদস্য বীণা কীর্তনিয়া৷ রয়েছেন হবিবপুরের তিনটি আসনে জয়ী জেলা পরিষদ সদস্য জুয়েল মুর্মু, মলিন মণ্ডল ও যুথিকা সরকার। গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সঞ্চিতা মণ্ডল জানালেন, তৃণমূলের অত্যাচারে প্রাণ বাঁচাতে দলীয় কার্যালয়ে এসে উঠেছেন৷ তাঁরা বাড়ি ফিরতে পারছেন না৷ একই বক্তব্য, ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা গাজোলের রানিগঞ্জ ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়ী সদস্য প্রভাতী মুর্মু ও ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা চুমকি হাঁসদার।
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
Comments