দল পরিবর্তনের জুলুম অব্যাহত, অভিযোগ হবিবপুরে
আবার উত্তপ্ত রাজনৈতিক মহল। গ্রাম পঞ্চায়েতের বিদায়ী বোর্ডের এক সদস্যের স্বামীকে মারধর করার সঙ্গে গুলি চালিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে৷ আহত পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী বর্তমানে বুলবুলচণ্ডী গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন৷ ঘটনার প্রেক্ষিতে তাঁর দাদা ৪ জনের বিরুদ্ধে হবিবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন৷ অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামলেও পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করেনি৷ যদিও এই ঘটনাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব৷ কার্যত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পারদ চড়ে বসেছে হবিবপুর থানার শোলাডাঙা গ্রামে।
হবিবপুর থানার শোলাডাঙা গ্রামের বিদায়ী গ্রাম পঞ্চায়েত বোর্ডের কংগ্রেসি সদস্য ছবি সাহা। স্বামী উৎপল সাহা (৩৫)। উৎপলবাবুর দাদা উত্তম সাহা পুলিশে দায়ের করা অভিযোগপত্রে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ এলাকারই বাসিন্দা, রঞ্জন মণ্ডল (পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার) তাঁর ভাইকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় প্রতিবেশী সঞ্জয় সিংহর বাড়িতে৷ সেখানে আগে থেকেই উপস্থিত ছিল আরও ২ জন তৃণমূল কর্মী৷ রঞ্জন তাঁর ভাইকে বলে, তাঁকে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল করতে হবে৷ তাঁর ভাই তাতে রাজি না হওয়ায় সঞ্জয় তাঁর ভাইকে জাপটে ধরে৷ বাকি ৩ জন তাঁকে লোহার রড ও পিস্তলের বাঁট দিয়ে বেধড়ক মারধর করে৷ ধারালো ছুরি নিয়ে তাঁর ভাইয়ের উপর হামলা চালায়৷ পরে তারা একটি গুলিও চালায়৷ হুমকি দেয়, তৃণমূল না করলে তারা তাঁর ভাইকে প্রাণে মেরে ফেলবে৷ তাঁর ভাই কোনরকমে সেখান থেকে পালিয়ে যায়৷ রাতেই তাঁকে বুলবুলচণ্ডী গ্রামীণ হাসপাতালে ভরতি করা হয়৷ এখনও তিনি চিকিৎসাধীন৷ এই ঘটনায় এদিন তিনি ওই ৪ তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে হবিবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন৷
উত্তমবাবু জানান, তাঁর ভাই এলাকায় কংগ্রেসের ভালো সংগঠক৷ এলাকায় বেশ পরিচিতি আছে তাঁর ভাইয়ের। এবারও তিনি এলাকায় দলীয় প্রার্থীর হয়ে নির্বাচনি প্রচার চালাচ্ছিলেন৷ তাতে সাধারণ মানুষ সাড়াও দিচ্ছিলেন। সেকারণেই তাঁকে তৃণমূলে টানার চেষ্টা করছে শাসকদলের দুষ্কৃতীরা৷ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন উৎপলবাবুকে দেখতে যান জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হেমন্ত শর্মা৷ তিনি জানান, ভোটে হার নিশ্চিত জেনে গোটা জেলাতেই সন্ত্রাস তৈরি করার চেষ্টা করছে তৃণমূলি দুষ্কৃতীরা৷ গতকালের ঘটনা তার একটি উদাহরণ৷ বুলবুলচণ্ডী গ্রাম পঞ্চায়েতে এবার তৃণমূলের হার নিশ্চিত৷ তাই শাসকদলের গুণ্ডারা তাঁদের দলের নেতা ও কর্মীদের উপর হামলা চালানো শুরু করেছে৷ অভিযুক্তদের গ্রেফতারের জন্য তাঁরা পুলিশকে ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছেন৷ সেই সময়ের মধ্যে পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করলে তাঁরা থানা ঘেরাও সহ বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন৷
এদিকে ঘটনাপ্রসঙ্গে তৃণমূলের হবিবপুর ব্লক সভাপতি প্রভাস চৌধুরি বলেন, কংগ্রেস এই এলাকায় পায়ের তলায় মাটি হারিয়েছে৷ তাই তারা এখন নাটক শুরু করেছে৷ তবে মানুষ তাদের এই নাটক ধরে ফেলেছে৷ তারা কংগ্রেসের কথায় আর বিশ্বাস করে না৷ তিনি নিশ্চিত, এলাকার বাসিন্দারা কংগ্রেসের পাতা ফাঁদে পা দেবে না৷
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
Comments