গায়েব করা হয়েছে গণধর্ষিতা ছাত্রীকে
রতুয়ায় গণধর্ষিতা এক কিশোরীকে গায়েব করার অভিযোগ উঠেছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। ওই কিশোরীর পরিবারের অভিযোগ, এই ঘটনায় তাঁরা ঘরের মেয়েকে উদ্ধার করার জন্য বহুবার পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও করেছেন। কিন্তু পুলিশ তাঁদের পাশে না দাঁড়িয়ে উলটে তাঁদের লাঞ্ছিত করেছে বলে অভিযোগ। গোটা ঘটনায় অভিযোগ জানানো হয়েছে পুলিশ সুপারের কাছেও। সেটাও একবার নয়, দু'বার। সেটাও পেরিয়ে গিয়েছে ৪ মাস। তবুও গণধর্ষণের শিকার সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রীর এখনও কোনও খোঁজ নেই। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধেও কোনও ব্যবস্থাও নেয়নি পুলিশ। ওই কিশোরীর পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য, পুলিশে অভিযোগ জানানোর জন্য তাঁদের হুমকি দিচ্ছে অভিযুক্তরা। যদিও ঘটনার প্রেক্ষিতে মুখে কুলুপ জেলার পুলিশ কর্তাদের। শুধুমাত্র তদন্ত চলছে বলে বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন পুলিশকর্তারা। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় ওই কিশোরীর অভিভাবকরা নাবালিকা মেয়ের খোঁজে এবার মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হতে চলেছেন।
কিশোরীর বাবার অভিযোগ, গত ৯ জুলাই সাফিকুল রায় ওরফে জাকির রায়, শেখ লদা ও শেখ সাকিব নামে এলাকার তিন যুবক মাদ্রাসা যাওয়ার পথে তাঁর মেয়েকে অপহরণ করে। মেয়েকে তিনদিন ধরে একটি ঘরে আটকে রেখে গণধর্ষণ করে ওই তিনজন। ১১ জুলাই নদীপথে বিহারে যাওয়ার জন্য ওই তিনজন স্থানীয় গোবরাঘাটে অসুস্থ অবস্থায় তাঁর মেয়েকে নিয়ে আসলে স্থানীয় গ্রামবাসীদের সন্দেহ হয়। যুবকদের আটক করে খবর দেওয়া হয় রতুয়া থানায়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সুযোগ বুঝে প্রায় অচৈতন্য অবস্থায় তাঁর মেয়েকে ফেলে ওই তিনজন সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পুলিশ তাঁর মেয়েকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে। এই ঘটনায় তাঁরা ওই তিন যুবকের বিরুদ্ধে রতুয়া থানায় গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। পরে তাঁরা সাফিকুল ওরফে জাকিরকে ধরে পুলিশের হাতে তুলেও দেন। কিন্তু পুলিশের রিপোর্টে অভিযুক্তকে নাবালক উল্লেখ করা হয়। ফলে মুক্ত হয়ে যায় অভিযুক্ত। এরপর তাঁরা সুবিচারের আর্জিতে আদালতে দ্বারস্থ হন। তারই মধ্যে গত ৮ অগাস্ট অভিযুক্তরা মাদ্রাসা থেকে ফেরার পথে তাঁর মেয়েকে অপহরণ করে। মেয়েকে তারা গায়েব করে দেয়। গোটা ঘটনা জানিয়ে রতুয়া থানায় অভিযোগ করেন তাঁরা। তবুও পুলিশ এখনও কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। উদ্ধার হয়নি তাঁর মেয়ে। তাই মেয়েকে ফিরে পেতে এবং এই ঘটনায় বিচার চাইতে এবার তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী ও মানবাধিকার কমিশনে দ্বারস্থ হতে চলেছেন।
রতুয়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে ওই ছাত্রী কিংবা অভিযুক্তদের এখনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, অভিযুক্তদের মধ্যে কেউ ওই ছাত্রীকে বিয়ে করে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে। তবে যেভাবেই হোক, ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করা হবে। ধরা হবে অভিযুক্তদেরও।
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
প্রতীকী ছবি সৌজন্যে পিক্স অ্যাবে।
Comments