রোগী মৃত্যুতে মেডিকেল কলেজে উত্তেজনা, প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর কর্মবিরতি তুললেন ইন্টার্নরা
রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। রোগী মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে হাসপাতালে ভাঙচুর ও ইন্টার্নদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে গতকাল রাত থেকেই কর্মবিরতি শুরু করেন ইন্টার্নরা। অবশেষে আজ প্রশাসনিক কর্তা ও মেডিকেল সুপারের সঙ্গে বৈঠক শেষে কর্মবিরতি তুলে কাজে যোগ দেন ইন্টার্নরা। এই ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করে মালদা জেলা আদালতে পেশ করা হয়েছে।
মৃত রোগীর নাম রূপলাল ঘোষ (৩৮)। বাড়ি পুরাতন মালদার নলডুবি এলাকায়। জানা গিয়েছে, গতকাল রাতে রূপলালবাবুকে সাপে কামড় দেয়। তড়িঘড়ি তাঁকে মালদা মেডিকেলে ভরতি করা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা রক্ত পরীক্ষা করে চিকিৎসা শুরু করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় রূপলালবাবুর। অভিযোগ, পরিবারের লোকজন এরপর হাসপাতালে ভাঙচুরের পাশাপাশি কর্তব্যরত ইন্টার্নদের মারধর করে। প্রতিবাদে কর্মবিরতি শুরু করেন ইন্টার্নরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন মেডিকেল সুপার ও ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। আজ দুপুরে ইন্টার্নদের নিয়ে বৈঠক করেন হাসপাতাল সুপার। উপস্থিত ছিলেন পুলিশ ও প্রশাসনিক আধিকারিকরা। এই ঘটনায় গ্রেফতারি ও উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাসের পরে কর্মবিরতি তুলে নেন ইন্টার্নরা।
মেডিকেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ইন্টার্নরা জানান, গতকাল রাতে সর্পাহত এক ব্যক্তিকে মেডিকেলে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসা শুরু হওয়ার পর ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। ক্ষোভে রোগীর পরিবারের লোকজন হাসপাতাল ভাঙচুরের পাশাপাশি কর্তব্যরত ইন্টার্নদের মারধর করে। এনিয়ে আজ বৈঠক করা হয়েছে। আমরা বৈঠকে সমস্ত অভিযোগ জানিয়েছি। উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাসে ফের কাজে যোগ দিচ্ছেন তাঁরা।
মৃতের পরিবারের তরফে জানানো হয়, রোগীকে আনার সময় ওয়ার্ডে কোনও সিনিয়র চিকিৎসক ছিলেন না৷ জুনিয়র ডাক্তাররা ইনজেকশন দেওয়ার পর বাঁধন খুলে দেওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে রোগীর মৃত্যু হয়। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে কিছু লোকজন টেবিল-চেয়ারে খানিকটা ভাঙচুর করে৷ সিভিক ভলান্টিয়ারদের সঙ্গে খানিক ধাক্কাধাক্কিও হয়। সেই সময় কোনো চিকিৎসক সেখানে ছিলেন বলে তাদের জানা নেই।
এমএসভিপি পূরঞ্জয় সাহা জানান,
গতকালকের ঘটনায় পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করেছে বলে জানতে পেরেছি। আজ বৈঠকে নিরাপত্তা সংক্রান্ত একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইন্টার্নরা ফের কাজ শুরু করছেন। এখন থেকে প্রতি ঘণ্টায় পুলিশ মেডিকেল চত্বরে রাউন্ড দেবে। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এজেন্সিকেও নিরাপত্তা কঠোর করতে বলা হয়েছে।
Comments