শিক্ষকের অভাবে অন্ধকারে পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ!
স্কুলের ভেতর থেকে পড়ুয়াদের গুণগুণ শব্দ। উঁকি মেরে দেখা গেল, ক্লাসরুমে পড়ুয়াদের একজনই ক্লাস নিচ্ছে। তবে অন্য একটি ক্লাসে একজন শিক্ষককে ক্লাস নিতে দেখা গিয়েছে। পুরো স্কুলে হাতে গোনা কয়েকজন পড়ুয়া। শিক্ষক মাত্র একজন। নিচে রাঁধুনিরা মিড-ডে মিল রান্না করছেন। পুরো স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ গড়ার দায়িত্ব কাঁধে রয়েছে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের। আরেক শিক্ষিকা অনুপস্থিত। এই অবস্থাতেই ২০১৫ সাল থেকে চলছে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের ভাটোল জুনিয়র হাইস্কুল।
স্কুল ভবনে চারটি ক্লাস রুম রয়েছে। তবে স্কুলের কোনও সীমানা প্রাচীর নেই। স্কুলে খাতায় কলমে পড়ুয়ার সংখ্যা ৩৬৭ জন। এই জুনিয়র হাইস্কুলে কোনও স্থায়ী শিক্ষক নেই৷ রয়েছেন ২ জন পার্শ্বশিক্ষক৷ অভিযোগ, তাঁদের মধ্যে একজন স্কুলে অনিয়মিত৷ ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অবশ্য প্রতিদিনই স্কুলে আসেন৷ একজন ক্লার্ক থাকলেও তাঁর দেখা মেলে না৷ তবে স্কুলে নিয়মিত মিড-ডে মিলের রান্না হয়৷ সেই খাবার খাওয়ার পরই স্কুল ছুটি৷
অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী লাভলি দাস জানান, স্কুলে শিক্ষকরা আসছেন না৷ আজ একজন এসেছেন৷ প্রধান শিক্ষক প্রতিদিনই স্কুলে আসেন৷ ম্যাডাম রোজ আসেন না৷ একদিন বাদে একদিন আসেন৷ শিক্ষক না থাকায় আমি ক্লাস নিচ্ছি৷ এভাবেই স্কুল চলে৷
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক আসরাফুল হক জানান, ২০১৫ সাল থেকেই শিক্ষকের সমস্যা চলছে৷ ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা ২০১৯ সালে অবসর নেন৷ তারপর স্কুলে আর শিক্ষক নিয়োগ হয়নি৷ আমরা ২ জন প্যারাটিচার গোটা স্কুল চালাচ্ছি৷ ২০২০ সালে অবশ্য একজন ক্লার্ক নিয়োগ করা হয়েছে৷ ২০২৪ সালে তাঁর নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হয়৷ পার্শ্ব-শিক্ষিকা শামিমা পারভিন নিয়মিত স্কুলে আসেন৷ সম্প্রতি তাঁর বাবা মারা গিয়েছেন৷ তাই এক সপ্তাহ ধরে তিনি স্কুলে আসতে পারেননি৷ এই পরিস্থিতিতে স্কুল সামলানো মুশকিল হয়ে গিয়েছে৷ সরকারের কাছে অনেকবার শিক্ষক নিয়োগের আবেদন জানানো হলেও কাজ হয়নি৷ তবে পড়ুয়াদের কেউ ক্লাস নেয় না। হয়তো ক্লাসে চিৎকার চ্যাঁচামেচি যাতে না হয়, সেই কারণে কেউ দলনেতার ভূমিকা পালন করে।
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
Comments