চিন-ভারত টক্করে বদলাল ছবি, ফিরল মাটির প্রদীপের চল
করোনা আর গালওয়ান দুয়ে মিলে সারা দেশের কাছে ভিলেন হয়ে উঠেছে চিন। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার শতাধিক চিনা অ্যাপ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। মানুষের মনেও চিন বিরোধী মনোভাব দেখা যাচ্ছে। সেই ছবি ধরা পড়েছে মালদা শহরের বাজারেও। সামনে দীপাবলি অন্যান্য বছর দীপাবলিতে রং-বেরংয়ের চিনা টুনিতে ঝলমল করে শহর। তবে এবছর ভিনদেশি আলো বর্জন করে মাটির প্রদীপকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন মানুষ। চিন-ভারত সংঘাতে স্থানীয় কুমোরদের মুখে হাসি ফুটছে।
করোনা আবহে দুর্গাপুজোর পর আসছে দীপাবলি। অন্যান্য বছর এই সময় শহর আলোকিত হয়ে ওঠে বিভিন্ন রংয়ের আলোকসজ্জায়। এই আলোকসজ্জার বেশিরভাগটাই চিনা প্রোডাক্ট। তবে এবছর করোনায় ত্রাহিত্রাহি অবস্থা গোটা বিশ্বের। এই ভাইরাসের উৎস সন্ধানেও জড়িয়েছে চিনের উহান প্রদেশের সরকারি ল্যাবের নাম। অপরদিকে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চীনা আগ্রাসনের পর চিন বিরোধী মনোভাব দেখা দিয়েছে দেশবাসীর মনে। মানুষ চিনা সামগ্রী বয়কট করতে শুরু করেছে। সেই ছবিই দেখা গেল দীপাবলির বাজারে। ডিজিট্যাল যুগে প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছিল মাটির প্রদীপ। নিউক্লিয়ার ফ্যামিলির ধাক্কায় ভূত চতুর্দশীর দিনে পূর্বপুরুষের উদ্দেশ্যে চোদ্দো প্রদীপ জ্বালানোর রীতি হয়েছিলও ব্যাকডেটেড। এবছর ভাগ্যের চাকা ঘুরেছে, মৃৎশিল্পীদের গলায় আর নেই আক্ষেপের সুর। চিনা টুনি লাইট, এলইডি বাল্বে বাজারে অমিল। আগের মতো সবার প্রথম পছন্দ মাটির প্রদীপ।
এক কুমোর প্রদীপ পাল জানান, অন্যান্য বছর কালীপুজোর সময় চিন থেকে রংবাহারি আলো এখানে আসত৷ এবার সেটা আসছে না৷ মোদী সরকার চিন থেকে এসব আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে৷ গালওয়ান ভ্যালিতে ভারতীয় সেনাদের সঙ্গে চিনাদের মুখোমুখি সংঘর্ষের পর মানুষ চিন দেশের তৈরি সব জিনিস থেকেই থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে৷ অন্যান্য বছর কালীপুজোর সময় চিন থেকে যেসব বৈদ্যুতিক আলো এদেশের বাজারে আসত, এবার সেটা আসছে না৷ বাজারে যতটুকু সেসব আলো রয়েছে, তারও চাহিদা নেই৷ বরং আমাদের তৈরি মাটির প্রদীপের চাহিদা আগের তুলনায় এবার অনেক বেশি৷ এবার হাজার প্রতি প্রদীপের দাম ৫০ থেকে ৭৫ টাকা বেড়েছে৷
[ আরও খবরঃ মোটা টাকার লোভ ছেড়ে বিনামূল্যে চিকিৎসা করে 'হিরো' ]
একই বক্তব্য এক আলোর ব্যবসায়ীর। তাঁর দাবি, মানুষের মধ্যে একটা চিন বিরোধী মনোভাব দেখা দিয়েছে৷ অন্যান্য বছর দীপাবলিতে চিনা টুনির যা বিক্রি হয়, এবার তার ১০ শতাংশও হয়নি৷ তাছাড়া এবার মালও পাওয়া যাচ্ছে না৷ এবার মানুষ মাটির প্রদীপের দিকেই বেশি ঝুঁকেছে৷ ফলে এবার ব্যবসায় লাভের আশা নেই বললেই চলে।
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
Comments