আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে গৃহযুদ্ধের হাওয়া চাঁচলে
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলীয় নেতাকর্মীদের একজোট হওয়ার বার্তা দিচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ মালদা জেলায় ঠিক তার উলটো ছবি। এবার তৃণমূলের গৃহযুদ্ধের ছবি উঠে এল চাঁচলে। দলীয় বিধায়কের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ তুলে মমতা বন্দ্যাপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন তৃণমূলের চাঁচল ১ নম্বর ব্লক সভাপতি৷ বিধায়কের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের সভানেত্রীও৷ যদিও বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ চাঁচলের বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ।
তৃণমূলের চাঁচল ১ নম্বর ব্লক সভাপতি শেখ আফসার আলির অভিযোগ, গত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে বিধায়কের অনেক অনৈতিক কাজকর্ম উঠে এসেছে। তাঁর কাজে দলের কর্মীরা বঞ্চিত হয়েছেন৷ এনিয়ে দিনের পর দিন দলীয় কর্মীদের ক্ষোভ বাড়ছে৷ বাধ্য হয়ে আমরা দলীয় শীর্ষ নেতৃত্বদের চিঠি মারফৎ অভিযোগ জানাচ্ছি। অভিযোগ যাচাই করলে আরও অনেক তথ্য উঠে আসবে। ম্যানেজিং কমিটি, গভর্নিং কমিটি, আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটার, লাইব্রেরি কমিটি থেকে শুরু করে নিয়োগ সংক্রান্ত যা কিছু ঘটছে, সব জায়গায় বিধায়কের স্বৈরতান্ত্রিক কাজ চলছে৷ দলকে কোনও তোয়াক্কা করছেন না বিধায়ক৷ যাঁরা দলের পুরোনো কর্মী, এই পদগুলিতে তাঁদের কেন নেওয়া হবে না? এর পিছনে টাকা-পয়সার লেনদেন রয়েছে কিনা জানি না৷
তৃণমূলের হরিশ্চন্দ্রপুরের নেত্রী মর্জিনা খাতুনও বিধায়কের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলছেন, ব্লক সভাপতি, বিধায়ক, অঞ্চল সভাপতি লিয়াঁজো রেখে কাজ করবেন৷ অথচ আমি যেদিন থেকে ব্লক সভাপতি হয়েছি, সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত চাঁচলের বিধায়ক আমাকে ডাকেননি। শুনেছি, লাইব্রেরির সভাপতি, কলেজের চেয়ারম্যান পদে বিধায়ক নাকি বিরোধীদের বসিয়েছেন৷ লোকসভা নির্বাচনের আগে দলীয় প্রার্থীকে জেতাতে তিনি মানুষের কাছে পৌঁছননি।

এনিয়ে বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ বলেন, যে কেউ যে কোনও ধরণের অভিযোগ তুলতেই পারেন। কিন্তু সেই অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করতে হবে। যিনি অভিযোগ করছেন, আমিই তাঁকে ব্লক সভাপতি করেছিলাম৷ যদি আমার কোথাও ভুল হয়, যদি অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়, দল যা শাস্তি দেবে আমি মাথা পেতে নেব৷ আমি একা কোনও সিদ্ধান্ত নিই না৷ ২০২১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন আমাকে চাঁচলে আনেন, সেই সময়ও একটি দল নানা ধরনের নোংরামি করেছিল৷ আমাদের দলের বড় নেতারাও আমাকে হারানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেছিলেন৷ কিন্তু মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রয়েছে।
জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র আশিস কুণ্ডুর দাবি, তৃণমূল অনেক বড় পরিবার৷ বড়ো পরিবারে একটু মনোমালিন্য হয়েই থাকে। এসব আমরা মিটিয়ে নেব। আমরা যখন পরিবারগতভাবে বসব, তখন সবাই একসঙ্গে থাকবে।
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
Comments