top of page

স্বামীর খুন নিয়ে বিস্ফোরক কাউন্সিলর স্ত্রী

নিহত স্বামীর শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের দিনই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন কাউন্সিলর স্ত্রী৷ সাফ জানালেন, এই ঘটনার পিছনে রয়েছে দলের গোষ্ঠী অভিসন্ধি৷ তাঁর দাবি, কে বা কারা তাঁর স্বামীকে খুনের ছক কষেছে, তা এখন দিনের আলোর মতো পরিষ্কার৷ জেলার প্রতিটি মানুষ তা জানে৷ শ্রাদ্ধের কাজকর্ম মিটলেই তিনি ছেলেকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তাঁকে সমস্ত বিষয় জানাবেন৷ এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সোমবার নিহত দুলাল সরকারের স্ত্রী চৈতালি ঘোষ সরকারের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্যের স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য৷ তাঁকেও নিজের সন্দেহের কথা খুলে বলেন চৈতালিদেবী৷


চন্দ্রিমা সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘এই ঘটনায় স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী ভীষণ উদ্বিগ্ন৷ তিনি পুলিশকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন৷ পুলিশ প্রশাসন নিজেদের কাজ করছে৷ আমাদের বিশ্বাস, এই খুনের পিছনে থাকা মূল মাথারা দ্রুত ধরা পড়বে৷ তাদের কঠোর শাস্তি হবে৷ এই খুনে বাইরের রাজ্য থেকে দুষ্কৃতীদের ভাড়া করে আনা হয়েছিল৷ কে বা কারা তাদের ভাড়া করেছিল, সেটা পুলিশকে খুঁজে বের করতে হবে৷ মূল অভিযুক্তরা অন্য রাজ্য কিংবা দেশে পালিয়ে গিয়েছে কিনা তা বলা যাবে না৷ তবে রাজ্যের পুলিশ যে বাইরে থেকেও অপরাধীদের ধরে আনতে সক্ষম, তা নিয়ে আমরা নিশ্চিত৷ চৈতালি আমাদের দীর্ঘদিনের সাথী৷ ওর স্বামীকে এভাবে খুন করা হয়েছে৷ ওর দুঃখ হওয়া স্বাভাবিক৷ ও আমাকে সেসবই জানিয়েছে৷ আমি হয়তো দু’দিন পর ওর সঙ্গে দেখা করতে আসতাম৷ কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আজই এসেছি৷ এই ঘটনার পিছনে অন্য রাজনৈতিক দলের ষড়যন্ত্র কিংবা দলের গোষ্ঠী কোন্দলের বিষয় আছে কিনা জানি না৷ তবে যে’ই এই কাজ করুক না কেন, ধরা পড়বেই৷’



চন্দ্রিমা দুলালবাবুর ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরই সংবাদমাধ্যমের সামনে বিস্ফোরণ ঘটান চৈতালি৷ তিনি বলেন, ‘পুলিশ প্রতিদিনই নতুন নতুন গ্রেফতার করছে৷ কিন্তু এটা কোনও ছোট ঘটনা নয়৷ যারা ধরা পড়ছে তাদের পিছনে একাধিক মাথা রয়েছে৷ তাদের যেন ধরা হয়৷ আজ চন্দ্রিমাদিকেও সেকথা জানিয়েছি৷ তাঁর সঙ্গে আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক৷ তিনি সব জেনে গেলেন৷ শ্রাদ্ধের সমস্ত কাজ শেষ করে আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তাঁকেও সব জানাব৷’


চৈতালি আরও জানান, ‘এই ঘটনার পিছনে দলের অভ্যন্তরে স্বার্থের সংঘাতও থাকতে পারে৷ অনেকে হয়তো ভেবেছিল, দুলাল সরকার রাজনৈতিকভাবে মুখ্যমন্ত্রীর যতটা কাছে রয়েছে, ততটা তারা পৌঁছোতে পারছে না৷ সেটাই তাদের হিংসার কারণ৷ কারণ, তাদের লোভ আর ক্ষমতার অপরিসীম চাহিদা৷ সেই চাহিদা পূরণের জন্যই তারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে৷ সম্প্রতি দল দুলাল সরকারকে চেয়ারম্যান করার কথা ভাবছিল৷ সেকথা এখানে এসে পৌঁছেছিল৷ সেই আক্রোশ থেকেও এই ঘটনা ঘটানো হতে পারে৷ রাজনীতি করতে গেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা অবশ্যই থাকবে৷ কিন্তু সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা যে এই পর্যায়ে পৌঁছোতে পারে, এভাবে একজনকে নৃশংসভাবে খুন করা হতে পারে, তা কখনও বুঝতে পারিনি৷ পুলিশের কাছে আমার আবেদন, কোনও প্রলোভন বা চাপে যেন আসল দোষীরা আড়াল না হয়ে যায়৷ কে বা কারা এই চক্রান্তের মূল মাথা, তা এখন দিনের আলোর মতো সবার কাছে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে৷ তবে আমি কারও নাম বলতে চাই না৷ আমি চাই, পুলিশই তাদের নাম সামনে নিয়ে আসুক৷’


চৈতালির নিশানায় কে বা কারা? প্রশ্ন উঠছে জেলার রাজনৈতিক মহলে৷ ইংরেজবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বলছেন, ‘তিনি যদি ভেবে থাকেন, তাঁর স্বামী চেয়ারম্যান হত, তাই তাঁকে মেরে দেওয়া হয়েছে, সেটা তাঁর ব্যাপার৷ তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে নিজের কথা জানাতেই পারেন৷ মুখ্যমন্ত্রী ভালো করে সব দেখুন৷ এনিয়ে আমার কোনও বক্তব্য নেই৷ আমিই সবার আগে মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছি, দোষীরা যাতে ধরা পড়ে৷


এদিকে তৃণমূলের জেলা সভাপতি আবদুল রহিম বকসির বক্তব্য, ‘রাজনৈতিক যোগ্যতা অনুযায়ী বাবলাদা যে কোনও পদ পেতে পারতেন৷ দল মনে করলে যে কোনও পদে তাঁকে বসাতে পারত৷ কেন তিনি খুন হলেন, তদন্ত শেষ না হলে বলা সম্ভব নয়৷ তবে পুলিশকে দ্রুত তদন্ত শেষ করতে হবে৷ মূল আসামীকে সামনে আনতে হবে৷ পুলিশ কিছু করতে না পারলে তৃণমূল কর্মীরাই রাস্তায় নেমে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করবে৷ বাবলাদাকে পৌরসভার চেয়ারম্যান করা হত কিনা তা আমি বলতে পারব না৷ তবে তাঁর সব ধরনের পদ পাওয়ার যোগ্যতা ছিল৷’


আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

Kommentare


বিজ্ঞাপন

Malda-Guinea-House.jpg

আরও পড়ুন

bottom of page