মানিকচকে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনে হিংসার বলি দুই
জেলায় পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন নিয়ে রাজনৈতিক হিংসা অব্যাহত। প্রধান গঠনকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে চলল গুলি ও বোমাবাজি। এর জেরে মৃত্যু হল দু'জনের। বোমাবাজিতে আহত ৩ বছরের এক শিশুও। মৃতদের নাম সালাম শেখ (২০) ও আজহার শেখ (৬০)। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে আজহারের। মানিকচক ব্লকের গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের হুকুমতটোলা গ্রামে আজ সকালে ঘটনাটি ঘটেছে। বোমাবাজিতে আহত ওই শিশুটি বর্তমানে মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার জেরে গ্রামে চলছে পুলিশি টহল।
উল্লেখ্য পঞ্চায়েত নির্বাচনে গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১০টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস ৫টি ও তৃণমূল কংগ্রেস ৫টি আসনে জয়ী হয়েছে। কংগ্রেস প্রথমে বোর্ড গঠনের চেষ্টা চালালেও পরে সেই চেষ্টা ছেড়ে দেওয়ায় তৃণমূলে কংগ্রেসের পক্ষে ওই পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন নিশ্চিত হয়ে যায়। ইতিমধ্যে ওই পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু প্রধান নির্বাচনকে নিয়ে কোন্দল শুরু হয়ে যায় শাসকদলের অন্দরে। আজ সকালে তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বলে মনে করছেন গ্রামবাসীদের একাংশের ধারণা।
মূলত: তৃণমূল কংগ্রেসের দুটি গোষ্ঠী নিজেদের লোককে প্রধান পদে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। এদের একপক্ষের নেতা হলেন ওই পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান সাইফুদ্দিন শেখ, যিনি প্রধান পদে নিজের পছন্দের প্রার্থী ঠিক করে রাখেন। অন্যদিকে স্থানীয় তৃণমূল নেতা জামিরুল শেখের হয়ে প্রধান পদের দাবিদার হন সেরাজুল শেখ। কয়েকদিন ধরেই এই নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে চোরাগোপ্তা ঝামেলা চলছিল।
আজ গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের দিন নির্ধারিত থাকায় সকাল থেকেই পঞ্চায়েত অফিসে পুলিশ নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু, সাইফুদ্দিনের লোকজন তার আগেই পঞ্চায়েত দপ্তর ঘিরে ফেলে। জামিরুল শেখের লোকজনকে সেখানে ঢুকতে তারা বাঁধা দেয়। এরপরই সেখানে শুরু হয়ে যায় দুপক্ষের মধ্যে বোমাবাজি। চলে গুলিও। বোমার আঘাতে সালাম শেখ নামে এক যুবকের ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয়। আজহার শেখের মাথায় ও ঘাড়ে গুলি লাগে। মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে তাঁকেও মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। বোমা ও গুলিতে আহত হয়েছেন ফারুক শেখ, মনিরুদ্দিন শেখ ও জিশান শেখ নামে তিন বছরের এক শিশু। বাড়ির সামনে খেলা করার সময় বোমার স্প্লিনটার এসে লাগে জিসান শেখের মাথায়। তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় মিলকি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু সেখান থেকে তাকে মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয় ।
তবে মানিকচক থানার পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। গ্রামে চলছে পুলিশি টহল। যদিও পুলিশ এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তবে স্থানীয় গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পুলিশের সামনেই গোটা ঘটনা ঘটলেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। সময়মতো পুলিশ ব্যবস্থা নিলে এই ঘটনা ঘটত না বলে গ্রামবাসীদের অভিমত। তবে এই নিয়ে পুলিশের তরফ থেকে এখনও কোনও বক্তব্য পাওয়া যায় নি।
আমাদের মালদা এখন টেলিগ্রামেও। জেলার প্রতিদিনের নিউজ পড়ুন আমাদের অফিসিয়াল চ্যানেলে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
Comentarios